ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা রন্টু, তপু, ইন্দ্র, চপল আর রুপম হচ্ছে বন্ধু।বাপ্পী হচ্ছে ওদের নতুন বন্ধু। সান্টুদের বাড়ির ছাদে বসে আছে ওরা। বাড়িটা অবশ্য পুরনো। এক সময় এটা জামিদার বাড়ি ছিল, এখন সান্টুদের। বাড়িটা বেশ চুপচাপ, সন্ধ্যার দিকে আরো নীরব হয়ে যায়। ওরা প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছে এখানে।বাপ্পীর জন্য অপেক্ষা করছে ওরা। বাপ্পীর আসার কথা ছিল, আসেনি এখনো, আসবে বলেও মনে হয় না। অথচ ওকে খুব জরুরি দরকার।না আসলে বড় ধরনের একটা সমস্যা হয়ে যাবে আজ। না, বাপ্প আর আসে না। ওদিকে খেলার মাঠ দখল কর ঘর তুলেছে মোখলেস ব্যাপারী।রাতের আঁধারে ঘরটাতে আগুন দিয়ে পুড়ে দিতে হবে। এর আগে আরো অনেক অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করেছে ওরা, প্রতিরোধও করেছে। মোখলেস ব্যাপারী সরকারি মাঠ দখল করেছে, মোট কথা এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ দখল করেছে। কিন্তু এ ঘরটাতে আগুন দেওয়ার কথা বাপ্পীর, সেই বাপ্পীরই কোনো খোঁজ নেই।আরেকটা সমস্যা হয়ে গেছে এলাকায়। প্রতিদিন নদীতে লাশ ভেসে আসছে। কারা যেরন রাতের আধাঁরে ঘুরে বেড়ায়? অন্যরকম একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়। এর মাঝেও বাপ্পীর দেখা নেই। অবশেষে একদিন পাওয়া যায় বাপ্পীকে। অবাক হয়ে যায় রন্টু, তপু, ইন্দ্র, চপল. রুপম, সান্টু। চুটিচুটি বাপ্পী এত বড় কাজ করেছে! একেবারে ভয়ঙ্কর কাজ!
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।