এস এম সোলায়মানের নাট্যরচনার নির্বাচিত সঙ্কলন সম্পাদনা ও প্রকাশনার দায়িত্ব নির্বাহ এক বেদনাবহ কাজ। নাট্যকার সোলায়মান সম্পাদনা পরিষদের সকল সদস্যেরই হয় স্নেহভাজন অনুজ কিংবা সতীর্থ। তাঁর চলবার কথা ছিল আরো দীর্ঘ পথ, প্রতিভার যে বিচ্ছুরণ তিনি একেবারে শুরু থেকে দেখিয়েছেন তা' নানা বাঁক অতিক্রম করে, জীবনের বহুবিধ অভিজ্ঞতা ধারণ করে সৃষ্টিশীল সম্ভারে আরো পল্লবিত হয়ে উঠবার কথা ছিল। কিন্তু জীবন এস এম সোলায়মানকে সে সুযোগ দেয় নি। পঞ্চাশ বসন্ত স্পর্শ করবার আগেই তাঁকে জীবনরঙ্গমঞ্চ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। একে তো আমাদের দেশে নাট্যচর্চা ও নাট্যনিবেদনের সুযোগ বিশেষ সীমিত, সৃষ্টিশীলতার দাবি পূরণের আগে নাট্যশিল্পীকে বাস্তব পরিস্থিতির অশেষ তাগিদ মেটাতে হয়, তবু ধমনীতে যাঁদের নাট্যরক্ত বহমান তাঁরা কোনো বাধাকেই বাধা বলে গণ্য করেন না। তবে সমাজবাস্তবতার অশেষ চাহিদা পূরণকালে শিল্পীর অন্তর্গত যে রক্তক্ষরণ ঘটে সে-খোঁজ আর ক'জনাই-বা রাখেন বা বোঝেন। প্রকৃত নাট্যশিল্পীরা হ্যামলেটের মতোই উপলব্ধি করেন শিল্প ও জীবনবাস্তবতার মিল রচনার কোনো অবকাশ না থাকলেও গ্রন্থিচ্যুত এই সময়কে সুস্থিত করে তুলতে প্রাণপাত করা ছাড়া উপায় নেই। সোলায়মানের শিল্পীসত্তাও তাই যন্ত্রণাদগ্ধ হয়েছে, অস্থিরচিত্ত হয়ে ফিরেছেন তিনি, কিন্তু সুস্থিতির সাধনা থেকে কখনো বিরত হন নি। পরিচালক হিসেবে তাঁর কৃত মঞ্চরূপায়ন, অভিনেতা হিসেবে তাঁর চরিত্র-চিত্রায়ন