সারসংক্ষেপ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতির আদি পিতামাতা/আদম ও হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টির পর নাজ-নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতে বসবাসের নির্দেশ দেন। এবং নিষিদ্ধ গাছের নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেন। কিন্তু ইবলিসের তথ্যসন্ত্রাসে প্রতারিত হয়ে আদম ও হাওয়া (আ.) আল্লাহর জানিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে ফেলেন। অতঃপর তাঁরা উভয়ে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সাথে সাথে তাওবা করেন। আল্লাহ তা‘য়ালা তাঁদের সে তাওবা কবুল করার পর জানিয়ে দেন যে- তাঁদেরকে কিছুকালের জন্য দুনিয়ায় গিয়ে জীবনযাপন করতে হবে এবং ইবলিসও সাথে থাকবে। মহান আল্লাহর এ সিদ্ধান্তে মানব জাতির আদি পিতা-মাতা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। আল্লাহ তা‘য়ালা জানিয়ে দেন, যুগে যুগে তাঁর কাছ হতে জীবন পরিচালনার তথ্য ধারণকারী কিতাব পৃথিবীতে যাবে। যারা সে কিতাব অনুসরণ করে চলবে তাদের কোনো ভয় ও চিন্তা থাকবে না (সুরা বাকারা/২ : ৩৮)। অন্যদিকে মহান আল্লাহ তাঁর কিতাব বাস্তবায়ন করে দুনিয়ার মানুষকে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য নবী-রসূল পাঠান। আর রসূলগণের কাছে ওহী হিসেবে কিতাব নিয়ে এসেছেন ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.)। মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করা অনেক মানুষের নানাবিধ কারণে আল্লাহর কিতাবের গ্রহণযোগ্য পরিমাণ জ্ঞান থাকে না। যাদের জ্ঞান থাকে তাদের পক্ষেও জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সমস্যার সমাধান তাৎক্ষণিকভাবে কুরআন ও সুন্নাহর তথ্যের ভিত্তিতে করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে অমুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করা অধিকাংশ মানুষের আল্লাহর কিতাবের গ্রহণযোগ্য পরিমাণ জ্ঞানার্জন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু ইবলিস শয়তান তথ্যসন্ত্রাস/ধোঁকাবাজীর মাধ্যমে বিপথে নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা মানুষের পেছনে লেগে আছে। তাই, প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক- কিতাব ও নবী-রসূল পাঠানো ছাড়া সাধারণ মানুষের সাথে মহান আল্লাহ কি অন্য কোনো যোগাযোগের পথ খোলা রাখেননি? যুক্তি (খড়মরপ) বলে সরাসরি মহান আল্লাহর কাছ হতে সাধারণ মানুষের জ্ঞান ও দিকনির্দেশনা পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা থাকার কথা। আর কুরআন ও সুন্নায় তা পরিষ্কারভাবে উল্লিখিত আছে। নানা কারণে এ বিষয়টি মানব সভ্যতার কাছে স্পষ্টভাবে আসেনি। বিষয়টি প্রমাণিত তথ্যের
Title
গবেষণা সিরিজ ৪০ : আল্লাহর সাথে কথা বলে জ্ঞান ও দিকনির্দেশনা পাওয়ার পদ্ধতি
প্রফেসর ডা. মাে. মতিয়ার রহমানের জন্ম বাংলাদেশের খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার আরজি-ডুমুরিয়া গ্রামের এক ধার্মিক পরিবারে। নিজ গ্রামের মাদ্রাসায় তাঁর শিক্ষা জীবন আরম্ভ। ছয় বছর মাদ্রাসায় পড়ার পর তাঁকে ডুমুরিয়া হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। ১৯৬৮ ও ১৯৭০ সালে তিনি যথাক্রমে ডুমুরিয়া হাইস্কুল ও সরকারী বি.এল কলেজ, দৌলতপুর, খুলনা থেকে কৃতিত্বের সাথে এস. এস. সি. ও এইচ.এস.সি পাস করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৭৭ সালে MBBS পাস করেন। দ্বিতীয় ও ফাইনাল প্রফেশনাল MBBS পরীক্ষায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ১০ম স্থান অধিকার করেন। MBBS পাস করে তিনি সরকারী চাকুরীতে যােগ দেন এবং ১৯৭৯ সালে ইরাক সরকারের চাকুরী নিয়ে সেদেশে চলে যান। ৪ বছর ইরাকের জেনারেল হাসপাতালে সার্জারী বিভাগে চাকুরী করার পর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যান এবং ১৯৮৬ সালে গ্লাসগাে রয়েল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জনস থেকে জেনারেল সার্জারীতে FRCS ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে কনসালট্যান্ট হিসেবে যােগদান করেন। সর্বশেষ তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রফেসর এবং সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ল্যাপারােসকোপ (Laparoscope) যন্ত্র দিয়ে একক হাতে। (Single Handed) পিত্তথলির পাথর (Gall Bladder Stone) অপারেশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ সার্জন (surgeon)। প্রফেসর ডা. মাে. মতিয়ার রহমান চিকিৎসক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি দীর্ঘ দুই দশক ধরে কুরআন গবেষক হিসেবে মৌলিক কাজ করে আসছেন। তাঁর গবেষণার বিষয় হলাে- ইসলামের সে সকল মূল বিষয় যা সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের বক্তব্য এবং বর্তমান বিশ্বের মুসলিমদের জ্ঞান ও আমলের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান। ইতােমধ্যে তার লেখা ৩৯টি গবেষণাধর্মী পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছে। এসব পুস্তিকায় তিনি মুসলিম সমাজে প্রচলিত জ্ঞানগত ভুল ধারণার সংস্কার করে কুরআন, সুন্নাহ ও Common sense -এর আলােকে ইসলামের সঠিক তথ্য তুলে ধরেছেন। তার সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য কাজ হলাে ‘আল কুরআন যুগের জ্ঞানের আলােকে অনুবাদ’। এ অনুবাদখানির সম্পাদনা পরিষদের নেতৃত্ব তিনি দিয়েছেন।