সুফিবাদ বিষয়ক প্রথম ফারসি গ্রন্থ 'কাশফ আল-মাহজুব'-এ বিখ্যাত সুফি দাতা গঞ্জে বখশ লাহোরী (মৃত্যু ১০৭২ খ্রিষ্টাব্দ) বলেছেন, পূর্বে সুফিবাদ নামবিহীন একটি বাস্তবতা ছিল, আর বর্তমানে এটি একটি বাস্তবতাবিহীন নামে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিককালে মুসলিম বিশ্বে সুফিবাদ বহুলাংশে অর্থহীন হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে একজন সাধারণ মানুষকে যদি সুফিবাদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তবে তিনি সম্ভবত পরলোকগত কোন পুণ্যবান ব্যক্তি বা কোন মাজারের কথাই বলবেন। মুসলিম বিশ্বে সুফিবাদ সম্পর্কে বর্তমানে অন্ততপক্ষে তিন ধরনের মনোভাব বিদ্যমান রয়েছে। প্রথমত রয়েছেন ধর্মীয় গোঁড়াপন্থীরা, তাঁদের মতে সুফিবাদ একটি ধর্মীয় বিচ্যুতি, বৈদেশিক প্রভাবে সৃষ্ট অনৈসলামিক ঝোঁক, যার বিলুপ্তি ঘটলেই মঙ্গল। মার্কসবাদী ও নবীন প্রজন্মের মতে সুফিবাদ বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার একটি চূড়ান্ত অবক্ষয়। আর আধুনিকপন্থীরা এ বিষয়ে কয়েকভাবে বিভক্ত। কেউ এর প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করেন, কেউ ব্যক্তিজীবনে সুফিবাদকে জড়াতে চান না, আবার প্রাচীন পুণ্যবানদের কথা মনে করে কেউ এর প্রতি দুর্বল। আমাদের দেশে অধিকাংশ ব্যক্তিই পার্থিব সমস্যা সমাধানের জন্য পীরফ-কিরদের সান্নিধ্য কামনা করেন এবং অলৌকিকতার মাধ্যমে তাঁদের ব্যক্তিজীবনের সমস্যার সমাধান আশা করেন। আত্মিক বা আধ্যাত্মিক উন্নতি মুষ্টিমেয় ব্যক্তিরই লক্ষ্য। কিন্তু আমরা চাই বা না চাই,