১৯৮৭ সালে সাতকানিয়া মাহমুদুল উলুম (দেওবন্দী) আলীয়া মাদরাসার শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু। দীর্ঘকাল পর্যন্ত নিয়োজিত থাকেন সেখানে। এরপর ১৯৯২ থেকে ওমরগনি এমইএস (চট্টগ্রাম) কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১৯ সালে এই। কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রশানের দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এর পাশাপাশি তিনি পাঠদান করেছেন জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া ও জামিয়া দারুল মাআরিফে। বর্তমানে তিনি জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া জিরি মাদরাসার মুহাদ্দিস। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিজাদয় হজের ভাষণ, খতিবে আজম মাওলানা সিদ্দিক আহমদ রহ.-এর জীবন ও কর্ম, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মদিনার সমাজ ও সংস্কৃতি, হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.-এব জীবন ও কর্ম, কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার, যুলকারনাইন, নির্বাচিত প্রবন্ধ, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন প্রভৃতি তার পাঠকনন্দিত গ্রন্থাবলির অন্যতম। মাকতাবাতুস সাহাবা থেকে প্রকাশিত সিরাতে হযরত আয়েশা রা. ও আর রাহিকুল মাখতুম তিনি সম্পাদনা করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, চীন, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফরসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষা ও গবেষণামূলক সেমিনার, সভা, মাহফিল ও দাওয়াতী কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি (১৯৪৩-২০০৬) পুরো নাম সফিউর রহমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আকবর ইবনে মুহাম্মাদ আলি ইবনে আব্দুল মুমিন মুবারকপুরি আযমি। তিনি একজন স্বনামধন্য ইসলামিক লেখক এবং ভারত উপমহাদেশের বিখ্যাত মুহাদ্দিস। তার লেখা রাসূল সা.-এর জীবনীগ্রন্থ আর-রাহিকুল মাখতুম সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বহু ভাষায় অনুদিত একটি বই আধুনিক সিরাতগ্রন্থ। তিনি ১৯৪২ সালের ৪ জুন ভারতের আযমগড় জেলার হোসাইনাবাদের মোবারকপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি স্থানীয় শিক্ষকদের কাছে লেখাপড়া করেন এবং আরবী ভাষা, ব্যকরণ, সাহিত্য, ফিকাহ, উসূলে ফিকাহ, তাফসির, হাদিস ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি শরীয়াহ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন একই সাথে মাদরাসায় শিক্ষকতা এবং লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে মুবারকপুরের দারুত তালিম মাদরাসায় এবং ১৯৭৪ সালে বেনারসের জামিয়া সালাফিয়ায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৮ সাল হতে তিনি মদিনাস্থ আন্তজার্তিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাসূল সা. বিষয়ক গবেষণা ইন্সটিটিউটে কর্মরত থাকেন। সর্বশেষ রিয়াদের মাকতাবায়ে দারুস সালামে গবেষণার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া বেনারসের মাসিক মুহাদ্দিস পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছেন। আরবী ও উর্দু ভাষায় তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা ত্রিশোর্ধ্ব। ২০০৬ সালের ১ ডিসেম্বর জুমাবার বেলা দু’টায় এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে এই মহান মনীষী মাওলার সান্নিধ্যে চলে যান।