ভূমিকা বইটি হাতে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি এই আইডিয়াগুলো আপনাকে সাহায্য করবে, যেমন এগুলো আমাকে এবং হাজার হাজার পাঠককে সাহায্য করেছে। আসলে আমি আশা করি এই 9 বই আপনার জীবনকে চিরদিনের জন্য বদলে দেবে। কখনও আপনি সবকিছু করার পর্যাপ্ত সময় পাবেন না। কাগজে কলমে কাজ ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব প্রজেক্ট, পড়ার জন্য সাময়িকপত্রের স্তূপ, বইয়ের পাহাড় আপনাকে দেওয়া হয়েছে। কোনও দিন তা খুঁজে দেখলে দেখতে পাবেন। কিন্তু বাস্তবে আপনি কখনও তা করতে পারবেন না। আপনি আপনার কাজের শীর্ষে কখনও যেতে পারবেন না। আপনি কখনও পারবেন না এসব বই, সাময়িকপত্র এবং আপনার অবসর সময়ের কাজের সবই করে সামনে এগিয়ে যেতে। অধিক প্রোডাকটিভ হয়ে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট সমস্যা সমাধানের আশা ভুলে যান। আপনি কয়টি পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট টেকনিক রপ্ত করেছেন তাতে কিছু যায় আসে না। আপনাকে বরাদ্দ করা সময়ে সর্বদাই অনেক কিছু করার থাকবে। কত সময় দেওয়া হল তা কোনও বিষয় নয়। নিজের সময় ও জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিতে একমাত্র আপনার চিন্তা, কাজ এবং কখনও শেষ না হওয়া দায়িত্বের নদী যা প্রতিদিন আপনার ওপর দিয়ে বয়ে যায় তার পরিবর্তন করতে হয়। আপনি যদি কিছু কাজ করা থেকে বিরত থেকে ওই সময়টুকু অল্প কিছু কাজে ব্যয় করতে পারেন যেসব কাজ আপনার জীবনে সত্যিকারের পার্থক্য তৈরি করবে তবেই একমাত্র নিজের কাজ ও কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আমি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে টাইম ম্যানেজমেন্ট স্টাডি করেছি। আমি পিটার ড্রাকার, এলেক্স ম্যাকেঞ্জি, এলান লাকেইন স্টিফেন কভে এবং এরকম অনেকের লেখার মধ্যে নিজেকে অবগাহন করিয়েছি। আমি ব্যক্তিগত এফিশিয়েন্সি ও ইফেক্টিভনেসের ওপর শত শত বই ও হাজার হাজার নিবন্ধ পড়েছি। বর্তমান এ বইটি হল এর ফলাফল। যখন আমি নতুন কোনও আইডিয়া পেয়েছি নিজের কাজে ও ব্যক্তিগত জীবনে পরীক্ষা করেছি। যদি তা কাজ করে তবে আমি আমার আলোচনায় ও সেমিনারে তা জুড়ে নিয়েছি এবং অন্যদের তা শিখিয়েছি। গ্যালিলিও একবার লিখেছিলেন আপনি কাউকে এমন কিছু শেখাতে পারবেন না যা সে এখনও কিছুই জানে না। আপনি এমন কিছু শেখাতে পারবেন যা তার সচেতনতার স্তরে রয়েছে। সেটাকে আপনার জ্ঞানের স্তর ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে এই আইডিয়া পরিচিত মনে হতে পারে। এই বই আরেকটু লেবেলের সচেতনতা সৃষ্টি করবে আপনি যদি এসব মেথড ও টেকনিক জানেন এবং যতক্ষণ না এসব অভ্যাসে পরিণত হয়। ততক্ষণ যদি প্রয়োগ করতে থাকেন তবে আপনি জীবনকে খুব পজিটিভ ভাবে বদলে দিতে পারবেন।
ব্রায়ান ট্রেসি একজন কানাডিয়ান-আমেরিকান বক্তা এবং আত্মোন্নয়নমূলক রচনা লেখক। তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' নামক সংস্থার চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ ও বিকাশে সহযোগিতা এবং সার্বিক উন্নয়নে কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা। ব্রায়ান ট্রেসি নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মান, লক্ষ্য, কৌশল, সৃজনশীলতা এবং সাফল্য- মনোবিজ্ঞানের এই শাখাগুলোর তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জনপ্রিয় এই বক্তার জন্ম কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে, তারিখটা ১৯৪৪ সালের ৫ জানুয়ারি। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা থেকে। ১৯৮৪ সালে কানাডার ভ্যানকুভারে তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' প্রতিষ্ঠা করেন। তার ৪০ বছরের বেশি কর্মজীবনে তিনি প্রায় ১,০০০ এরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছেন, এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। কানাডা, আমেরিকার বাইরেও প্রায় ৭০টি দেশে তার প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ব্রায়ান ট্রেসি এর বই এবং তার আলোচনার ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সারা বিশ্বের কর্পোরেট ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোক্তা তরুণদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ও বিক্রিত ' সাইকোলজি অব এচিভমেন্ট'সহ প্রায় ৫০০টিরও বেশি অডিও ও ভিডিও প্রোগ্রাম তৈরি ও প্রযোজনা করেছেন, যা ২৮টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমগ্র হলো 'দ্য ২১ সাকসেস সিক্রেটস অব সেল্ফ মেইড মিলিওনিয়ারস', 'টাইম ম্যানেজমেন্ট', 'ইট দ্যাট ফ্রগ!', 'চেঞ্জ ইয়োর থিংকিং চেঞ্জ ইয়োর লাইফ', 'লিডারশিপ', 'কিস দ্যাট ফ্রগ', 'নো এক্সকিউজ : দ্য পাওয়ার অব সেল্ফ ডিসিপ্লিন' ইত্যাদি। ট্রেসির লেখা বইগুলো তার অনুপ্রেরণা জোগানো বক্তব্যগুলোর মতই আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয়। কর্পোরেট ম্যানেজমেন্টের জগতে আত্মোন্নয়নমূলক পন্থা বাতলে তরুণদের কাছে ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমূহ বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।