একাত্তর সালে পঞ্চম বর্ষের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র। এই তরুণ বয়সে দেশ মাতৃকার ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকা যায় না। অগণিত বাঙালির মতাে বেলায়েত হুসাইনও থাকতে পারেননি। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। স্বাধীনতা সংগ্রামে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। তরুণ তাজা মনের সেই সব উত্তেজনাময় মুহর্ত ও কর্মচঞ্চল দিনগুলির অভিনেতা লিপিবদ্ধ করেছিলেন বেলায়েত হুসাইন, অঅন্ত খােলা মনে, সাদামাটা ভাষায়। কোনাে রাজনীতির রাখ-ঢাক নেই। নেই কোনাে সাহিত্যিকের ভাষার অলঙ্কার, কথার মারপ্যাচ। আছে একেবারে নিজের সরল ভাষার, অল্প বয়সের মনের উপলব্ধি ও সে সময়ের অভিজ্ঞতার কথা। আমাদের এটাই বড় পাওনা। বেলায়েত হুসাইন একাত্তর সালের সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি যেমন করে দেখেছিলেন ও বুঝেছিলেন, সেভাবেই লেখেছিলেন তার ডাইরীর পাতা। সেই ডাইরী অবলম্বনে ১৯৭২ সালে লেখা একাত্তর স্মরণী প্রায় সে ভাবেই প্রকাশ করা হলাে। বইয়ের নামটি সামান্য বদল করা হলাে একাত্তর স্মরণে। স্বাধীনতা যুদ্ধে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অবস্থান ও কর্মরত তরুণ ‘ডাক্তার সাব’ এর দলিল এটা। তাই রাজনীতি নয়, ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ লেখাটি বিবেচনা করার জন্য অনুরােধ রইলাে।
ডা. বেলায়েত হুসাইন এম,বি,বি,এস (ঢাকা), এফ,এ,সি,এস (ইউ,এস,এ) এফ,আই,সি,এস (ইউ,এস,এ) ডিপ্লোমেট, আমেরিকান বাের্ড অব ইউরলজি। বেলায়েত হুসাইন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার। ডােয়াইবাড়ী গ্রামে ১৯৪৮ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম ইজ্জত আলী সরকার, মাতা যােবেদা খাতুন। গ্রামের স্কুলে পড়াশােনা শুরু, পরে ঢাকা কলেজ শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে ডাক্তারী পাশ করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তিনি মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। বেলায়েত হুসাইন ১৯৭৫ সনে আমেরিকা চলে যান এবং সেখানে ইউরলজিকাল সার্জারীতে ট্রেনিং নেন। কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর বর্তমানে ওহায়াে অঙ্গরাজ্যে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন। তার স্ত্রী ডা. কহুরাণী ও এক মেয়ে কেয়া এবং ছেলে শুভকে নিয়ে বেলায়েত হুসাইন এখন স্থায়ীভাবে আমেরিকাবাসী।