মানুষটা ছবি আঁকেন, কোমলমতি শিশু-কিশোদের ছবি আঁকতে শেখান। আবার মাঝে মধ্যে গানও গাইতে দেখি। কিন্তু মানুষটা যে কবিতা লিখতে পারেন, তা আগে জানা ছিল না। একজন প্রতিভাবান মানুষ হিসেবে মো. আনিছুর রহমান দাদাভাই আঁকাআঁকি, সংগীতচর্চা ও লেখালেখিসহ বেশি কয়েকটি সত্তাকে একইসাথে লালন করেন। সত্যি, তাঁর এমন সৃজনশীল চর্চাবোধ দেখে মুগ্ধ আমি। তিনি যেহেতু কবিতা লেখালেখি করেন, সেহেতু বই প্রকাশ করতে হবে, এটি সহজাত বৈশিষ্ট্য এবং সঠিক সিদ্ধান্ত। আমাকে তিনি যখন কবিতাগুলো পাঠিয়ে বললেন, ‘দাদাভাই, দেখেন তো আমার কবিতা দিয়ে বই হবে কিনা!’ আমি কবিতাগুলো পেয়ে পড়া শুরু করি। আর পড়ার পর কী বুঝলাম, তা এই মুখবন্ধে সংক্ষেপে বলাই আমার উদ্দেশ্য। আমি সবসময় যে কথাটি বলে থাকি, কবিতার ভাষা হবে সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল। মো. আনিছুর রহমান দাদাভাইয়ের কবিতা পড়ে প্রথম মন্তব্য এই যে তার কবিতাগুলো সহজভাবে লেখা হয়েছে। কোনো কবিতাতেই এমন কোনো কঠিন শব্দচয়ন তিনি করেননি, যা কিনা পাঠক বুঝতে পারবেন না। তিনি তাঁর সরল মনের ভাবনা থেকে খুব সরল ভাষায় কবিতাগুলো লিখেছেন। এরপর যদি তাঁর কবিতার বিষয়বস্তুর দিকে নজর দিই, তাহলে এটি নির্দ্বিধায় বলতে হয় তিনি এমন একজন শিল্পী যে কিনা মানুষের মনের প্রেম-ভালোবাসা ও আবেগকে উপলব্ধি করতে পারেন। তার বেশ কিছু কবিতায় রোমান্টিকতার ছাপ মিলেছে। এছাড়া দেশ, সমাজ ও পারিপার্শ্বিক নানান বিষয়ে কবিতা লিখেছেন, যা তাকে গুণী লেখকের তালিকায় একদিন নাম লেখাতে সাহায্য করবে। শুরুর দিকে বলেছিলাম, তিনি ছবি আঁকা শেখান। ‘মিশ্রণ আর্ট সঙ্গীত নিকেতন’ নামে তাঁর একটি প্রতিষ্ঠান আছে, যেটির নামকরণ থেকেই বইটির নামকরণ করেছেন। এর থেকে উপলব্ধি করা যেতে পারে, তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনুপ্রেরণা ও ভালোবাসা পেয়েছেন বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে। যখন তাঁর প্রিয় মানুষগুলোর হাতে ‘মিশ্রণ’ বইটি তুলে দেবেন, নিশ্চিত তিনি ভালোবাসায় সিক্ত হবেন। তাঁর প্রতি আমারও অগাধ ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। প্রিয় মানুষের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মিশ্রণ’ সবার মনে জায়গা করে নিক, সেই প্রত্যাশা রইল। শুভকামনা সবসময়। মোহাম্মদ অংকন কবি ও কথাসাহিত্যিক
মো. আনিছুর রহমান একজন বহুমুখী প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব। তিনি একাধারে কবি, ছড়াকার এবং অন্যদিকে কণ্ঠশিল্পী ও চিত্রশিল্পী। তাঁর জন্ম ১৯৭৯ সালের ১১ অক্টোবর পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার বড় পাইকশা গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। পিতা মো. নিজাম উদ্দিন ও মাতা মোছা. জমেলা খাতুন। মোছা. আয়শা খাতুন তাঁর সহধর্মিণী, প্রথম পুত্র- রিয়াদুল ইসলাম, কন্যা- আবিদা সুলতানা ও দ্বিতীয় পুত্র- মোঃ আব্দুল্লাহ রাইয়ানকে নিয়ে তাঁর সংসার জীবন বেশ ভালো চলছে। বর্তমানে তিনি মিশ্রণ আর্ট ও সঙ্গীত নিকেতন, এ/৬৩ বাজার রোড, সাভার, ঢাকা’তে বসবাস করছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করার তেমন সুযোগ হয়নি তাঁর। তবে আই.এ. পাস করার পর উচ্চশিক্ষা অর্জনের পূর্বেই তাকে জীবনযুদ্ধে নামতে হয়। নানান ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। পেশাগত দিক দিয়ে তিনি একজন চিত্রশিল্পী ও গায়ক। তাঁর কাজের দক্ষতার প্রমাণ মেলে অনেক কবি-লেখকের বইয়ের প্রচ্ছদ ও অলংকরণ আঁকার মাধ্যমে। ছোটবেলা থেকেই তাঁর লেখালেখির অভ্যাস। মূল পেশার পাশাপাশি ছোটবেলার শখটাও ধরে রেখেছেন। ছড়া-কবিতা লেখা যেন তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছে। নিজের সাথে নিজে কথা বলা সেদিনের সেই কিশোর আজ বহুমাত্রিক প্রতিভাধর হিসেবে বইয়ের পাতায় নিজেকে স্থান করে নিয়েছেন। সবকিছু মিলে তিনি একজন সফল মানুষ। ‘মিশ্রণ’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও তাঁর লেখা অনেকগুলো পাণ্ডুলিপি প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।