ইবনে ইসহাক (র)-এর রচিত 'সীরাতুর রাসূলুল্লাহ্'-র সংশোধনকারী হিসাবে ইবনে হিশাম (র) জগতে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি 'আস-সীরাতুন্ নববিয়্যাতে' বর্ণিত কিছু কবিতার সঠিক পাঠ লিপিবদ্ধ করেন। এতে তিনি কবিতা তাতে যোগ করেন। কঠিন শব্দ ও বিশেষ বিশেষ শব্দসমূহের বিস্তারিত ব্যাখ্যা সংযোজন করেন এবং কোথাও কোথাও বংশ তালিকা সংশোধন করেন, অর্থাৎ গ্রন্থটির যা অপূর্ণতা ছিল, তিনি তা পূরণ করেন দেন। তাতে ইবনে হিশাম (রহ)-এর সংস্করণের মাধ্যমে গ্রন্থটির জনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। 'আস্-সীরাতুন্ নববিয়্যাহ্' গ্রন্থটি ভালভাবে পড়ার জন্য তিনি তৎকালীন কৃষ্ণা নিবাসী যিয়াদ ইবনে আব্দুল্লাহ বাক্কায়ী (মৃ. ১৮৩ হি./৭৯৯ খ্রি.)-এর কাছে ইরাকে চলে যান। ইনুল-বরকী, যাহাবী, তাকিরাতুল্-হুফ্ফায, তাবাকাত ইত্যাদি গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী ইবনে হিশাম (র)-এর অনবদ্য রচনা 'আস্-সীরাতুন্ নববিয়্যাহ্' এক অমর কীর্তি। পরবর্তীকালে সীরাতে রাসূলের উপর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় যত গ্রন্থ রচিত হয়েছে, সবগুলো গ্রন্থেরই মূল ভিত্তি ইবনে হিশাম (র)-এর অমর এ গ্রন্থ। ঐতিহাসিক ধারা বিবরণীর সঙ্গে পবিত্র কুরআন নাযিলের ধারা বিবরণী এতে সন্নিবেশিত হওয়ায় এ গ্রন্থের মাহাত্ম্য বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।