ভাষা হলো এক বহতা নদী। বাংলা ভাষার সাথে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার একটা নিগুঢ় সম্পর্ক রয়েছে। চট্টগ্রামের 'পণ্ডিত বিহার ' সেখানেই তো চর্চিত হয়েছে বাংলা ভাষার আদি শিকড় বাকর। সিদ্ধাচর্যাগনই চর্যার চারুকার। চর্যাপদই হলো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার সূতিকাগার। চট্টগ্রামের আশয় বিষয় নিয়ে ইতিহাসের খেরোখাতা খুলতে গিয়ে সর্বোপরি পুরানো কথার প্রতিফলন ঘটাতে আঞ্চলিক ভাষার প্রয়োগ খুব একটা সহজসাধ্য নয় তারপর ও বাংলা সাহিত্যেরএকটা অংশের সাথে লীন করে নিতে প্রচেষ্টা সংহত হয়েছে।চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে এরি মাঝে অনেক ছড়া সম্বলিত বই বের হয়েছে। অনেক কবিতা রচিত হয়েছে এবং তা বিভিন্ন মাধ্যমে আলোকিত হয়েছে। ' পরান কাঁদের ' গ্রন্থ ও আঞ্চলিক ভাষায় রচিত সনেট কাব্য গ্রন্থ। প্রশ্ন ও আপত্তি থাকতে পারে এই গ্রন্থকে ঘিরে যে এখানে আঞ্চলিক ভাষা পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেনি। কোথাও কোথাও যেন বাঁক নিয়েছে প্রশ্নটা বা আপত্তিটা অপ্রাসঙ্গিক নয়। কারণ আমাদের কাছে চট্টগ্রামের এবং আঞ্চলিক ভাষা সত্যিকার অর্থে কোনটা এবং কিরকম তা স্পষ্ট নয়। এর কারণ হলো প্রতি ৩ কিলোমিটার অন্তর এই ভাষার উপর অন্য ভাষার পলি পড়েছে আর তাতে এই ভাষার স্বর, সুর তালে এসেছে ভিন্নতা।তাই চট্টগ্রামের একেক স্থানের ভাষায় উচ্চারণে এসেছে ভিন্নতা। এই কাব্যগ্রন্থে পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের ইতিহাসের কিছু প্রাচীন ইতিহাস তুলে আনতে গিয়ে সনেটের কাঠামো ও আঙ্গিক ঠিক রাখতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাব্যবিন্যাসে আঞ্চলিক ভাষার স্বরে পরিবর্তন এসেছে। এরপরও এই গ্রন্থ ইতিহাস আশ্রয়ী প্রথম আঞ্চলিক ভাষায় সনেট কাব্যগ্রন্থ। এখানেই পাওয়া যাবে চট্টগ্রামের কিছু স্থানের আদি ঠিকানা স্বরূপ ও প্রাচীন ইতিহাস।