ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা পরিযায়ী পাখিদের ভ্রমণের নির্দিষ্ট একটা সময় প্রকৃতি বেধে দিয়েছে, কিন্তু যাদের পায়ের তলায় শর্ষে; সেই সব মানুষের দেশ ভ্রমণের কোনো সময় অসময় নেই। এর জ্বলন্ত প্রমাণ বহুমাত্রিক লেখক রাবেয়া খাতুন। জীবনের মধ্যসময়ে উপনীত হবার পূর্বেই পশ্চিম ও পূর্ব গোলার্ধের অসংখ্য দেশ তিনি ভ্রমণ করেছেন। সেই সব ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন চমৎকার সব কাহিনী। বাংলা সাহিত্যে ভ্রমণ নির্ভর কাহিনীর অপ্রতুলতা না থাকলেও মনোজ্ঞ, মনোরম সুখপাঠ্য ভ্রমণ কাহিনীর অভাব রয়েছে। রাবেয়া খাতুনের ঐকান্তিক প্রয়াসে তার অনেকখানি আজ পূর্ণ। তাঁর কাহিনীর বৈশিষ্ট্য এখানে যে, তিনি ঘটনাটি বর্ণনা করেন তার সাথে তুলে আনেন সেখানকার অতীত ইতিহাস। তাই যখন তাঁর লেখা পড়ি, অবাক ইহ। এখানে ভ্রমণকে উপজিব্য করে লেখক তৈরি করেছেন মনোজ্ঞ উপন্যাস। যার টানাপোড়ন ও সুখ-দুঃখের সাথে পাঠক নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। গল্প পড়তে পড়তে পাঠক তার নিজের অবস্থানকে আবিষ্কার করবেন কখনও দেশে কখনও বিদেশে। দেশ যাই হোক চরিত্ররা সবাই বাঙালি এবং তাদের জীবন যাপন ও বৈচিত্র অনেককে অবাক করলেও পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে নানা ঘোরপাকে। বিশ্বাস করি বা না করি জীবনে অনেক কিছুই ঘটে যা অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবের জন্য ঘোর সত্যি।
Rabeya Khatun বাবা মোহাম্মদ মুলুক চাঁদ। মা হামিদা খাতুন। চার সন্তানের জননী- সাগর কেকা প্রবাল কাকলী। বাবা ছিলেন সরকারী কর্মচারী। বদলীর চাকুরী। রাবেয়া খাতুনের শৈশব কৈশোর তাই কেটেছে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন শহরে ও পুরোনো ঢাকায়। মূলত ঔপন্যাসিক হলেও সাহিত্যের সব শাখায় রয়েছে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। লিখেছেন গবেষণাধর্মী গ্ৰন্থ, অসংখ্য ছোট গল্প, নাটক, ভ্ৰমণ কাহিনী, স্মৃতিকথা, কিশোর সাহিত্য। প্রকাশিত পুস্তকের সংখ্যা পচাত্তর। এক সময় শিক্ষকতা করতেন। বর্তমানে লেখালেখির কাজে নিবেদিত । প্রিয় পাঠ্য সাহিত্য ছাড়াও জ্যোতিবিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস। শখ দেশ ভ্ৰমণ। ঘুরেছেন বিশ্বের বিভিন্ন (দেশে। অবসরে প্রচুর গান শোনেন। চলিচ্চিত্র ও নাটক দেখেন। চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে তিনটি উপন্যাস । উপন্যাসের জন্য সম্মানিত রাষ্ট্ৰীয় পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলা একাডেমীসহ আরো দেড় ডজন পুরস্কারে ভূষিত।