"রক্তাক্ত পিলখানা" বইয়ের ফ্ল্যাপের অংশ থেকে নেয়া: ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে যতােগুলাে তদন্ত হয়েছে, মতামত এসেছে এর সবগুলােতেই মােটা দাগে যা বলা হয়েছে তার সংক্ষিপ্তরূপ হচ্ছে, যে কারণে এ বিদ্রোহ হয়েছে, তা ছিল অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন। সেনাবাহিনীর মনোেবল নষ্ট করা, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা এবং দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়াই ছিল এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কারণ। বিডিআর বিদ্রোহের পর দেশের কোটি কোটি মানুষ কষ্ট পেয়েছেন। সেই কষ্টের মধ্যেও অনেকে আবার কপাল কুচকে অপ্রাসঙ্গিক অনেক কথা বলেছেন। বুঝে হােক, না বুঝে হােক, ধারণা থাকুক আর নাই থাকুক সেনাবাহিনী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। বিডিআর বিদ্রোহের পর আড়াইশ’ বছরের পুরনাে বাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গিয়েছিল। বিডিআর হারিয়েছিল এ বাহিনীর গৌরব, ঐতিহ্যসহ সবকিছু। সেনাবাহিনী হারিয়েছিল নিবেদিত প্রাণ, নির্ভিক ৫৭ কর্মকর্তা। জাতি হিসেবে আমরা কি হারিয়েছি সেই কথা কি আমরা কখনাে ভেবিছি??? দরবার হলে সেদিন আসলে কি ঘটেছিল? এখন পর্যন্ত তথ্য ও দলিল বলতে আছে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার সাক্ষাতকার, ২৫ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত রিপাের্টে কয়েকজন জওয়ানের সাক্ষাতকার, সরকারি গঠিত তদন্ত কমিটির রিপাের্টসহ সেনা বাহিনী আর বিডিআরের নিজস্ব তদন্ত রিপাের্টে যা এসেছে সেটাই । ওখানে কোনাে গণমাধ্যম কর্মীরা ছিলেন না। ফলে ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। অকাট্য প্রমাণ হিসেবে কিছু স্থির চিত্র পাওয়া গেছে যা শতভাগ সত্য। আর পাওয়া গেছে সিসি টিভির ক্যামেরার কিছু ফুটেজ। যেখানে একজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ফুটেজ আছে। সেদিন আসলে কি ঘটেছিল তার শতভাগ বর্ণনা পাওয়া সম্ভব। সেনা কর্মকর্তাদের সাক্ষাতকার শুনে কেউ কেউ বিশ্বাস করেছেন, আবার কেউবা বলেছেন অতিরঞ্জিত। বছর যতাে যাবে বিতির ঘটনা নিয়ে আসবে আরাে নানান তথ্য। দরবার হলে যে রক্তের দাগ, তা শুকিয়ে গেলেও এই বিডিআর বিদ্রোহ বাংলাদেশের ইতিহাকে বার বার নাড়া দেবে ।