বিনয়ী হোন মর্যাদা আপনার পদচুম্বন করবে الْحَمْدُ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنُؤْمِنُ بِهِ وَنَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ وَنَعُوْذُبِاللَّهِ مِنْ شُرُوْرِ انْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا مَنْ يَهْدِهِ اللهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلَا هَادِيَ لَهُ وَنَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَنَشْهَدُ أَنَّ سَيِّدَنَا وَسَنَدَنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَبَارَكَ وَسَلَّمَ تَسْلِيمًا كَثِيرًا كَثِيرًا أَمَّا بَعْدُ : عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقولُ: مَنْ تَوَاضَعَ لِلهِ رَفَعَهُ اللهُ، فَهُوَ فِي نَفْسِهِ صَغِيرٌ وَ فِي أَعْيُنِ النَّاسِ عَظِيمٌ ، وَمَنْ تَكَبَّرَ وَضَعَهُ اللهُ، فَهُوَ فِي أَعْيُنِ النَّاسِ صَغِيرٌ وَ فِي نَفْسِهِ كَبِيرٌ حَتَّى لَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِمْ مِنْ كَلبٍ أَوْ خِنْزِيرٍ. হযরত উমর রাদি, বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: 'যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। সে নিজের কাছে ছোট এবং মানুষের চোখে সম্মানিত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অহংকার করে, আল্লাহ তাকে হেয় করে দেন। সে মানুষের কাছে তুচ্ছ হয় এবং নিজের কাছে সে বড়। পরিশেষে সে মানুষের কাছে কুকুর কিংবা শূকরের চেয়েও ঘৃণিত ও তুচ্ছ হয়ে যায়।' [তিরমিযী, শুআবুল ঈমান, ৬/২৭৬] বিনয়-নম্রতার গুরুত্ব সম্মানিত সুধী ও প্রিয় ভাইয়েরা! আমি আপনাদের সামনে বিনয়-নম্রতা সম্পর্কে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীস পড়েছি। যার অর্থ-'যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়- নম্রতা অবলম্বন করবে আল্লাহ তা'আলা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন।' আল্লাহর তাওফীক হলে আমি আপনাদের সামনে বিনয়ের উদ্দেশ্য, এর গুরুত্ব, হাকীকত এবং এর উপর আমল করার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব ইনশা- আল্লাহ।
প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী শুধু ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে বই রচনা করেননি, তিনি একাধারে ইসলামি ফিকহ, হাদীস, তাসাউফ ও ইসলামি অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ। আর তা-ই নয়, তিনি একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালতে, এমনকি পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চেরও বিচারক পদে আসীন ছিলেন। মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে ১৯৪৩ সালের ৫ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান দুটি আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হলে তার পরিবার পাকিস্তানে চলে আসে এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। শিক্ষাজীবনে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে ইসলামি নানা বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা নিয়েছেন। তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, যেখান থেকে অর্থনীতি, আইনশাস্ত্র ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেন। আর পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ. ডিগ্রি। দারুল উলুম করাচি থেকে পিএইচডি সমমানের ডিগ্রি অর্জন করেছেন ইসলামি ফিকহ ও ফতোয়ার উপর। সর্বোচ্চ স্তরের দাওয়া হাদিসের শিক্ষাও তিনি একই প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করেন। বিচারকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও বিভিন্ন ইসলামি বিষয়, যেমন- ফিকহ, ইসলামি অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্তর্জাতিক ফিকহ একাডেমির স্থায়ী সদস্যপদ রয়েছে তাঁর। পাকিস্তানে 'মিজান ব্যাংক' নামক ইসলামি ব্যাংকিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাকিস্তানে ইসলামি অর্থনীতির প্রসারে তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য বইও। তকী উসমানীর বই এর সংখ্যা ৬০ এর অধিক। শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী এর বই সমূহ রচিত হয়েছে ইংরেজি, আরবি ও উর্দু ভাষায়। শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'Easy Good Deeds', 'Spiritual Discourses', 'What is Christianity?', 'Radiant Prayers' ইত্যাদি ইংরেজি বই, ও 'তাবসেরে', 'দুনিয়া মেরে আগে', 'আসান নেকিয়া' ইত্যাদি উর্দু বই উল্লেখযোগ্য। এসকল বই ইসলাম প্রসারে, এবং বিভিন্ন ইসলামি ব্যাখ্যা প্রদান ও আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।