অর্ধাঙ্গিনী (গল্পের তুলিতে জীবনের ছবি) মা ছাড়া এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই ফারিহার। চাচাতো ভাই সালেহ-এর সঙ্গে বড় শখ করে মা তার বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর দেখা যায়-সালেহ সুবিধার লোক না। ফারিহাকে অনেক কষ্ট দেয়, মারধর করে। ওর মা-বাবাকেও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে ছাড়ে না সালেহ গায়ে হাত তুললে ফারিহা মায়ের বাড়ি চলে যেত। মেয়ের কষ্ট দেখে মায়ের বুক ফেটে যেত। কিন্তু চোখের পানি ফেলা ছাড়া মা- মেয়ের কিছুই করার ছিল না। দশবছর এভাবেই কেটে যায়। একদিন হঠাৎ করেই ফারিহার মা প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পরেন। সংবাদ পেয়ে ফারিহা তার মাকে দেখতে আসে। একথা ওকথা শেষে, মায়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে-মা! তুমি চলে গেলে আমি বড় একা হয়ে যাব। আমার দুঃখ-কষ্ট দেখার মতো কেউ থাকবে না। তুমি ছাড়া একটুখানি সান্ত্বনা দেয়ার মতো তো আর কেউ নেই। মেয়ের কথায় মায়ের কলজেটা মুচড়ে ওঠে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলেন- তোমার স্বামীর আচরণ অসহ্য হয়ে উঠলে এখানে চলে আসবে। ওজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। দু'হাত তুলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাবে। চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে বলবে তোমার কষ্টের কথা। সেই সাথে স্বামীর হেদায়েতের জন্যও দোয়া করবে। আল্লাহর কাছ থেকে কেউ নিরাশ হয় না মা! এক সময় ফারিহার মা মারা যায়। আরও কত কিছু বদলায়, কিন্তু ফারিহার যন্ত্রণার জীবনে কোনো রদবদল আসে না। মায়ের মৃত্যুর পর যখনই ফারিহা স্বামীর অমানবিকতার শিকার হত-মায়ের কথা মতো মায়ের বাড়ি চলে যেত। মায়ের রুমটায় গিয়ে হুঁহুঁ করে কাঁদত। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে তার সব দুঃখগুলো তুলে ধরত। এতে তার মনটা হালকা হয়ে যেত। এরপর আবার সে স্বামীর ঘরে ফিরে যেত!