শিক্ষার সকল শাখার জন্যই পরিবেশ শিক্ষা গুরুত্ব বহন করে। তবে প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ ও দক্ষ শ্রমিকদের জন্য এটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, তারা এমন বহু ধরনের উন্নয়নমূলক ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, যা পরিবেশের ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলে। কর্মক্ষেত্রে ও আবাস-স্থলে দূষণ আক্রান্ত পরিবেশের শিকার হওয়ার আশঙ্কাও তাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি। সে কারণে বিগত সিকি শতকে শিক্ষাবিদ ও পেশাদারদের মধ্যে পরিবেশ শিক্ষা সম্পর্কে আগ্রহ যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি সম্প্রতি, পরিবেশের গুণাগুণ ও উন্নয়নের অন্যান্য দিকের মধ্যে সম্পর্ক-সূত্র দেখতে শুরু করেছেন নীতি-নির্ধারক ও শিক্ষাবিদগণ। তারা অধিকতর স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করছেন, যা পরিবেশগত, সামাজিক, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক যোগসূত্রের প্রতি নজর দেবে। দেশের পরিবেশের দ্রুত অবনতি বিবেচনায় নিয়ে এবং ১৯৯২ সালের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের শিক্ষাক্রম পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত সমীক্ষণের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংশোধিত পাঠক্রমে ৫ম/৬ষ্ঠ সেমিস্টারের জন্য 'পরিবেশ অধ্যয়ন' পৃথক আবশ্যিক বিষয় হিসেবে সকল কারিগরি কোর্সের অন্তর্ভুক্ত করেছে। উন্নয়নশীল দেশে শিল্প ও কৃষির উন্নয়নের প্রধান সংগঠক হচ্ছে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা-স্নাতক, ছাত্র, শিক্ষক ও নীতিনির্ধারকগণ। স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দরকার। পরিবেশ রক্ষণে সঠিক ধরনের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও নেতৃত্ব প্রদান করলে মধ্যস্তরের মানবশক্তি তথা প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ ও কারিগরি বিশারদরা হয়ে উঠতে পারেন পরিবর্তনের চাবিকাঠি।