বর্তমান বাংলা সাহিত্যের শুধু প্রধান কবি নন, আল মাহমুদ বিশ্বসাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। তিনি কথাসাহিত্যেও রেখেছেন ঈর্ষণীয় অবদান। তাঁর রচিত প্রত্যেকটি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, যেন এক একটি হীরকখণ্ড। তাঁর কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, শিশুসাহিত্য সব কিছুই আমাদের চেনাজানা পরিবেশ থেকে উঠে এসেছে। সব কিছুই মনে হয় আমরা জানি, কিন্তু উপস্থাপনার ঢঙ, চিত্রকল্প, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, ছন্দ-মাত্রায় এমন অপরূপ রং ধারণ করে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়, যা দেখে আমরা চমকে উঠি, চরম তৃপ্তিবোধ করি। আমাদের গ্রামবাংলার পরিচিত চিত্র এর আগে আমরা জীবনানন্দ দাস, জসীম উদ্দীনের লেখায় ঢের দেখেছি। তাঁরাও অসাধারণ শক্তিমত্তা নিয়ে গ্রামবাংলাকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। আমরা তাঁদের লেখা পাঠ করে পুলকিত, গর্বিত। কিন্তু আল মাহমুদ তাঁদেরই মতো আবহমান বাংলার প্রকৃতি, নারী, নৈসর্গ নিয়ে লিখলেও তিনি সম্পূর্ণ আলাদা, সম্পূর্ণ একক। তিনি যে চিরায়ত বাংলা, বাংলার মানুষের জীবন, নর-নারীর মুখ তুলে ধরেছেন, তা তাঁর একান্তই নিজস্ব। অর্থাৎ এ বাংলা তাঁরই, বাংলার মানুষ, বাংলার নর-নারী সবই তাঁরই কলমের ডগায় সম্পূর্ণ আলাদাভাবে চিত্রিত হয়েছে।