নান্দনিক ফুলের রাজ্যে অর্কিডের রূপমাধুরী অনন্য। অঙ্গজ সৌন্দর্যে অর্কিড যেমন অনিন্দ্যকান্তি - তেমনি ফুলের সুষমা, বর্ণবৈচিত্র্য ও গঠনবৈচিত্র্যের দিক দিয়েও সে অতুলনীয়। আধুনিক যান্ত্রিক সভ্যতার ডামাডোলে দিশেহারা মানুষের মনে সৃষ্টি হয়েছে এক নিঃসীম শূন্যতা। নিজের তৈরি কারাগারে আজ যেন সে নিজেই অন্তরীণ। কিন্তু সৌন্দর্যপিয়াসী মানুষের মন যান্ত্রিকতার এই নিগড় ভেঙে মানসিক প্রশান্তি ও সৌন্দর্য অন্বেষণের জন্য উন্মুখ। অনেকের কাছে তাই নিসর্গচর্চার অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে লাবণ্যময়ী অর্কিড। তাছাড়া ভেষজ গুণাগুণের জন্যও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এই উদ্ভিদের সমাদর। আমাদের দেশে বাংলা ভাষায় লিখিত অর্কিডের ওপর বইপত্র তেমন একটা চোখে পড়ে না। বর্তমান গ্রন্থে ৪৪টি গণভুক্ত ১০৬টি দেশজ প্রজাতির পরিচিতি তোলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া অর্কিডের অঙ্গসংস্থান, চাষ, লালনপালন ইত্যাদি সম্পর্কেও সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। অর্কিড পরিচিতি অধ্যায়ে প্রজাতিসমূহকে তাদের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামের আদ্যক্ষরের ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছে। সাধারণ পাঠকের কথা বিবেচনা করে দ্বিপদ নামকে প্রতিবর্ণীকরণের মাধ্যমে বাংলায় লেখা হয়েছে। প্রথম সংস্করণে ভুলত্রুটি থাকাটাই স্বাভাবিক। ভুল-ভ্রান্তির সব দায় একান্তই আমাদের। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী ধ্রুব এষ - তাঁর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। গ্রন্থটি শৌখিন অর্কিড লালনপালনকারী, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অর্কিড চাষি, গবেষক, উদ্যানবিদ, নিসর্গপ্রেমী, পরিবেশবাদী, উদ্ভিদবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীসহ পাঠকমহলে সমাদৃত হলে আমাদের এই প্রচেষ্টা সার্থক হবে।