সূচিপত্র গতানগতিক কোষগ্রন্থ বলতে যা বুঝায় নারীকোষ তা নয়। সামগ্রিক বিবেচনায় একটি একটি সুচিন্তিত বিশ্লেষণাত্মক গ্রন্থ।এতে স্থান পেয়েছে নারীর জীবন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রসঙ্গ, যার অধিকাংশই বিতর্কিত এবং সামাজিকভাবে অমীমাংসিত। বর্ণক্রম অনুসারে বিষয় সন্নিবেশ করার পাশাপাশি লেখক তাঁর নিজস্ব ভাবনাকে পরিমিতভাবে পাঠকের অবগতিতে আনার প্রয়াস পেয়েছেন এবং নারী-পুরুষ অভিন্ন অধিকারের প্রশ্নে অনড় থেকে কায়েমি পুরুষতন্ত্রকে যুগপৎ সমালোচনা ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নারীকোষ নারীর ইতিহাসও বটে। এতে উঠে এসেছে আবহমানকালের নারীর অনুপুঙ্খ পরিচিতি। গ্রন্থটির বিষয় নির্বাচন এবং রচনা কৌশল এমনই যে, সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে তাল রেখে নারী সম্পর্কিত যে নতুন অনুষঙ্গগুলো দেখা দেবে তা সংযোজন করার সুযোগ থেকেই যাবে। ফলে পুনর্মুদ্রণের সুযোগ এলে প্রতিবার গ্রন্থটির শরীর হবে আরও সমৃদ্ধ। আমরা নিশ্চিত, যারা নারী-পুরুষের অভিন্ন অধিকারে বিশ্বাসী বা বিশ্বাসী নন, যারা পুরুষতন্ত্রের একচেটিয়া আধিপত্য স্বীকার করেন বা করেন না, যারা কুসংস্কার ও তথাকথিত শাস্ত্রের অহেতুক পীড়ন থেকে উদ্ধার পেতে চান বা চান না, তাদের সবার জন্য এই বিষয়ভিত্তিক আকর গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ
লেখক মাহমুদ শামসুল হক পেশায় সাংবাদিক। এ পর্যন্ত একাধিক সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও প্রথম শ্রেণীর দৈনিক পত্রিকায় যথাক্রমে নির্বাহী সম্পাদক, ইনচার্জ এবং সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি লিখছেন কলাম, ধারাবাহিক, প্রবন্ধ, কবিতা, রম্য, উপন্যাস ও সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিবৃত্ত। বরাবরই তিনি প্রথার বিপরীতে লেখেন, বেছে নেন তুলনামূলকভাবে কম লেখা হয়েছে এমন বিষয়। এ ব্যাপারে তিনি স্বাতন্ত্র রক্ষায় যত্নবান, প্রকাশভঙ্গিতেও। জন্ম ২০ মার্চ, ১৯৫২ সন, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে। বাবা মাে. হাতেম আলী সরকার, মা জরিনা বেগম। লেখক এসএসসি ও বি.এ পাস করেন যথাক্রমে ১৯৬৬ ও '৭০ সালে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে একাধিক বিষয়ে পড়াশােনা করে গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতায় এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৮২ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ‘তিনটি ভয়ংকর উপদ্রব ছাড়াও লেখকের অন্যান্য উল্লেখযােগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- 'যুদ্ধাপরাধের বিচার’, ‘শাহবাগ আন্দোলন ও অন্যান্য লড়াই', 'নদী’ (নদ-নদী বিষয়ক)’, ‘প্রাসাদ ষড়যন্ত্র : ক্ষমতা দখলের ইতিহাস’, ‘নারীকোষ’, নারী-নক্ষত্র’, ‘বিশ্বাসের বিবর্তন’, ‘তন রাধা মন কানু'(পদাবলী অবলম্বনে উপন্যাস), ইরাক: রক্তাক্ত প্রত্নভূমি’, ‘সেই রাধা সেই কৃষ্ণ’, ‘দ্রোহ প্রেম আনন্দ বিষাদ', 'মানুষের শক্ৰমিত্র, রসগােল্লা' (রম্য), ‘ফিরে যাই নিজের ধুলায়, (কাব্যগ্রন্থ)। লেখকের ‘দেহকাব্য : বাংলা কবিতায় অঙ্গসুষমা’ গ্রন্থটি লাভ করেছে সেরা মানের গ্রন্থ-২০১৬ বাংলা একাডেমি পুরস্কার।