১৯৬৯ সালে পূবালী প্রকাশনী, ঢাকা থেকে বের হয়েছিল আমার প্রথম বই ফরিদপুরের কবি সাহিত্যিক। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় হলো, এ বইটি পাঠক ও গবেষক মহলে আদৃত হয়েছিল। কবি সাহিত্যিকদের পরিচিতির সঙ্গে ফরিদপুরের ইতিহাস, পত্রপত্রিকা, লোকসাহিত্য সম্বলিত হওয়া – আদৃত হওয়ার অন্যতম কারণ। - বরাত বা সূত্রগ্রন্থ হিসেবে অনেক গবেষক, বিদ্যার্থী এ গ্রন্থের শরণাপন্ন হওয়ার সুবাদে আমার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। এ গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসকে মূল ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালে বের হয়েছিল আমার লেখা ফরিদপুরের ইতিহাস। চাহিদা থাকলেও এটি বাজারে নেই। সংবাদপত্র অংশকে ভিত্তি করে ফরিদপুর: সাংবাদপত্র ও সাংবাদিক প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। ফরিদপুরের লোকসাহিত্য গবেষণায় স্নেহভাজন কবি সাংবাদিক শেখ সামসুল হক, ড. মাসুদ রেজা এগিয়ে আসায় এক্ষেত্রে আমি আর কাজ করিনি । ইচ্ছে ছিল ফরিদপুরের কবি সাহিত্যিক-এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করবো বর্ধিত কলেবরে। কিন্তু সংখ্যাধিক্যের কারণ এবং অর্থিক বিষয় বিবেচনা করে একটি পৃথক বই করলাম – ফরিদপুরের লেখক অভিধান নামে — উদ্দেশ্য দীর্ঘদিনের শ্রমে সংগৃহীত তথ্যগুলো সংরক্ষণ করে রাখা এবং কৌতূহলী পাঠক গবেষকদের চাহিদা পূরণ সামান্য হলেও মেটানো। আমি যখন জেলা পর্যায়ে এ ধরনের কাজের সূচনা করি তখন জেলা বা জাতীয় পর্যায়ে আকরিক বা এ জাতীয় গ্রন্থের উদ্যোগ দৃষ্টিগ্রাহ্য ছিলো অল্প । এখন অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। এটাই সান্ত্বনা ও আশার কথা। এ গ্রন্থে অনেক ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা রয়ে গেল এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি । কোনো প্রতিষ্ঠানের সাহায্য ব্যতিরেকে এ কাজ সম্ভব হয়েছে আমার অদম্য নেশা ও ইতিহাস ঐতিহ্য সচেতনতার কারণে । প্রসঙ্গত, এই অভিধান গ্রন্থে নামসূচি গ্রন্থিত হয়েছে বাংলা বর্ণক্রমে । প্রত্যাশা থাকবে দেশের বাংলা একাডেমী, শিল্পকলা একাডেমী, প্রেস ইন্সটিটিউট এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ জাতীয় কাজে অধিক মনোনিবেশ করে 'বাঙালি জাতি'র মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।
জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ মে, ফরিদপুর শহরে। তিনি মূলক গবেষক। তবে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার মেধাবি ভ্রমণ স্বীকৃত সত্য। পেশাগত জীবনে দীর্ঘকাল অধ্যাপনায় কাটিয়েছেন- সরকারি ইয়াছিস কলেজ, সদরপুর সরকারি কলেজে, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ও বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে। পাশাপাশি মগ্ন থেকেছেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে। রাজেন্দ্র কলেজে’র উপাধ্যক্ষ ও বঙ্গবন্ধু কলেজে’র অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে নিবেদিত। সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতায় তার আন্তরিকতা ফরিদপুরে সর্বজনবিদিত। নান্দনিক মনন চর্চার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জসীমউদদীন স্বর্ণপদক।