অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী আশরাফ একাধারে একজন কবি, সাহিত্যিক, সাহিত্য সমালোচক, লেখক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, ইসলামী শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, ইসলামিক স্কলার, সফল সংগঠক, বিশ্বমানের একজন অধ্যাপক, বহু ভাষার পন্ডিত, বিশেষকরে শিক্ষার ইসলামিকরণের অগ্রনায়ক ও পথিকৃৎ। সৈয়দ আলী আশরাফ ছিলেন মুসলিম উম্মার জাগরণের অন্যতম অগ্রদত। তিনি তাঁর জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি একদিকে যেমন ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ও মহান পন্ডিত। অন্যদিকে বাংলা সাহিত্যাঙ্গনের অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও শক্তিমান কবি ও সাহিত্যিক। একই সাথে তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক জগতের সূফীসাধক ও শিক্ষার ইসলামিকরণের মাইলফলক। শিক্ষার ইসলামীকরণের মাধ্যমে মুসলিম জাতির হারানো সভ্যতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এবং আধুনিক বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি এক অবিস্মরণীয় নাম। স্বজাতি ও মুসলিম উম্মার জন্য গভীর মমতাও দরদপূর্ণ স্বর্ণহৃদয়ের অধিকারী। সৈয়দ আলী আশরাফ গত শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ বা শিক্ষা সংস্কারক ছিলেন তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। সৈয়দ আলী আশরাফ মুসলিম বিশ্বের এক বিরল ও অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি শুধুমাত্র শিক্ষার ক্ষেত্রে ধর্মীয়ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধন করেননি, পাশাপাশি তিনি তাঁর ব্যক্তি জীবনেও এই সমন্বিত শিক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছি-ে লন। যার ফলে তিনি একদিকে যেমন ছিলেন বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য গগণের উজ্জ্বল নক্ষত্র অপরদিকে আধ্যাত্মিকতা এবং সূফীবাদের প্রবাদ পুরুষ নামে সুখ্যাত। এখানেই সৈয়দ আলী আশরাফ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং অন্যান্য কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক ও পন্ডিতদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি আধুনিক তথা পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ধর্মীয় তথা ইসলামী শিক্ষার দুই আঙিনায় সুদীর্ঘ সময় সমান্তরালভাবে বিচরণের ফলে বিপরীতমুখী শিক্ষার এই দুই ধারাকে একই সূত্রে গেঁথে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাব্যবস্থা মুসলিম বিশ্বকে উপহার দিয়েছেন। তাইতো মাসিক মদিনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক উপহার দিয়েছেন। তাইতো মাসিক মদিনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন খাঁন সৈয়দ আলী আশরাফ-এর শিক্ষা-দর্শন সম্পর্কে লিখেছেন; "এটি এমন একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা-দর্শন, যে দর্শন মুসলিম উম্মার বিগত ১৪ শত বছরের সঞ্চিত প্রজ্ঞার ঐতিহ্য হজম করে আধুনিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে পরিবেশিত হচ্ছে নতুন প্রজন্মের কাছে"। চিরকাল বেঁচে থাক সৈয়দ আলী আশরাফ-এর চিন্তা ও শিক্ষা দর্শন। তাঁর শিক্ষা দর্শন চর্চায় ফিরে আসুক মুসলিম বিশ্বের হারানো ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সোনালী যুগ। এই মহান ব্যক্তির প্রতি রইল অসংখ্য শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা। অবশেষে প্রভুর দরবারে ফরিয়াদ জানাই, জান্নাতি নূরে নূরান্নীত হোক তাঁর পরকালীন জীবন। যেমনি ভাবে তিনি তাঁর শিক্ষার আলো দিয়ে আলোকিত করেছেন মুসলিম ভূবন।