তিরমিজীর দেশ দেখার এক অভিনব চেষ্টাই কাঙ্ক্ষিত নিসর্গ। তার দৃষ্টি দিয়ে দেশকে দেখার মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে এ দেশের বঞ্চিত মানুষদের সংগ্রাম, সৌন্দর্য, সংকট এবং সম্ভাবনার গল্প। তিরমিজী চা বাগান দিয়ে তার যাত্রা শুরু করে। দেখে শত শত বছর চা বাগানে কাজ করেও শ্রমিকরা ভ‚মির মালিক নয়। সে দেখে আদিবাসীদেরও রয়েছে ভ‚মি বঞ্চনা। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর অববাহিকায় বসবাসরত মানুষেরা কেনো এত দরিদ্র? কেনো তারা মঙ্গাপীড়িত? উপক‚লবাসীদের নিরাপদ পানির স্থায়ী সমাধান কেনো হয় না? লবণাক্ততার জন্য তারা চাষাবাদ করতে পারে না। তাদেরও জীবন কঠিন সংগ্রামে জর্জরিত। হাওরাঞ্চলের মানুষের জীবনে পাহাড়ি ঢল অভিশাপের মত কাজ করে। কিন্তু হাওররক্ষা বাঁধ তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাহলে এই বাঁধ কেনো সময়মত দেয়া হয় না? এ দেশের মূল চালিকা শক্তি কৃষি, গার্মেন্টস শিল্প, প্রবাসী আয়। কৃষক-শ্রমিকরাই চাকা ঘুরিয়ে এগিয়ে নিচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। তাই যদি হয় তাহলে কী পাচ্ছে তারা? তাদের এত সমস্যা কেনো? তিরমিজী শুধু মানুষের জীবন-সংগ্রামই দেখে না। দেশজুড়ে দেখে অফুরন্ত সৌন্দর্য আর সম্ভাবনা। এসব খুঁজতে সে যায় কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, ছেঁড়াদ্বীপ, সোনাদিয়া, সুন্দরবন। সেখানকার সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য যেমন তাকে মুগ্ধ করে তেমনি সে সেখানে খুঁজে পায় নানা সংকট ও সম্ভাবনা। এ দেশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এর বৈচিত্র্য ও ষড়ঋতুর রূপ সৌন্দর্য। ইলিশ যদি জিডিপিতে ভ‚মিকা রাখে তাহলে জেলেরা কেমন আছে? এখানকার সমুদ্র, ইলিশ, জামদানি, এখানকার মাটি-ফসল সব কিছুতে রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। যা আমাদের চেয়েও বেশি জানে বিদেশিরা। তারা এ দেশকে গ্রাস করতে চায়। প্রকল্প ও চুক্তি দিয়ে কুক্ষিগত করতে চায় তারা আমাদের দেশকে। আমাদের নিজস্ব শিল্প-সম্পদের বিকাশ এখানে ঘটছে না। আমদানি নির্ভর শিল্পসহ আরও কিছু বিষয় এখানে গড়ে তোলে এক ধরনের সাম্রাজ্য। তাই নিয়ে চলে বৈশ্বিক রাজনীতি। এত কিছু দেখে তিরমিজী আসলে কী করতে চায়? কী তার উদ্দেশ্য? এসব নিয়েই কাঙ্ক্ষিত নিসর্গ।