সুখ-দুঃখের অনুভূতির ক্ষেত্রে মানুষের প্রবণতা প্রায় অভিন্ন।সম্পদ লাভ করলে, পদোন্নতি পেলে কিংবা রোগমুক্তির ফলে মানুষ খুবখুশি হয়। আরো খুশি হয় যদি দুনিয়ার সবকিছু তার অনুকূলে থাকেঅথবা তার সব সাধ-অভিলাষ পূরণ হয়। পক্ষান্তরে এ মানুষই যদি অস্ব^চ্ছলতা বা ক্সদন্যতার শিকার হয়,অপদ¯ হয় কিংবা অসু¯ হয়ে পড়ে, তখন তার তেমনই কষ্ট লাগে। বেদনাবিধুর নীল হয়ে যায়। এটাই মানুষের স্বাভাবিক প্রকৃতি। কিš‧চেষ্টা করলে এ প্রকৃতিকে কিছুটা পরিবর্তন করা যায়। মানুষ তখন ইচ্ছা করলে সুখের মতো দুঃখেও মন খুলে হাসতে পারে। আমরা এখানে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই,যেগুলোর মাধ্যমে আমরা সবসময় আনন্দময় সময় কাটাতে পারব। কষ্টগুলোকে জয় করে জীবনকে সুখময় করতে সক্ষম হব।মানবজীবনের রূঢ় বাস্তবতা হলো, এখানে আনন্দের সাথে থাকবে বেদনা, আর হাসির সাথে জড়িয়ে থাকবে কান্না। দুঃখের সাথে থাকবেসুখ আর সুখের পর আসবে দুঃখ। অনেকটা দিনরাতের বিবর্তনের মতোই এদের আবর্তন চলতে থাকবে। তাই মানসিকভাবে সুখ পেতে হলে প্রথমে এ বাস্তবতাটিকে আমাদের মেনে নিতে হবে। সুতরাং ছোটো-খাটো বিষয়ে আমরা কেন অতিরিক্ত টেনশনকরব? কেন তুচ্ছ কোনো ঘটনাকে বড় করে দেখে নিজের দুঃখকেবাড়িয়ে তুলব?তবে সত্যকথা হলো, দুশ্চিন্তা নিজ থেকে করতে হয় না, বরং তা অনুমতি ছাড়াই আপনার মনের দরজা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে আপনাকেকাবু করে ফেলতে চায়। তাই এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কারণ দুশ্চিন্তার খোলা দরজাগুলো বন্ধ করার হাজারো উপায় রয়েছে।এ গ্রšে আমরা সে উপায়গুলো নিয়েই আলোচনা করেছি।দুশ্চিন্তার খোলা দরজাগুলো বন্ধ করে দুশ্চিন্তাকে কীভাবে হটাতে হয়,সে কথাই আমরা এ গ্রšে লিপিবদ্ধ করেছি।এখানে ভিন্ন একটি প্রসঙ্গের অবতারণা করতে চাই আমরা;অনেক মানুষকে দেখি, যাদেরকে সবাই ভালোবাসে। যাদের সঙ্গে সাক্ষাত করে কিংবা সময় কাটিয়ে মানুষ আনন্দবোধ করে। আপনিও কি তাদের মতো হতে চান না?আপনি কেন সবসময় অন্যের প্রতি মুগ্ধ ও আকৃষ্ট হয়ে থাকবেন? চেষ্টা করলে তো আপনিও অন্যকে মুগ্ধ ও আপনার প্রতি আকৃষ্ট করতেপারেন। অতএব, কীভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় ও মুগ্ধকর করা যায়, এগ্রšে আমরা সে আলোচনাই করব। আপনার কাছের কেউ যখন কথা বলে, তখন সবাই চুপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনে, কথাগুলো হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করে। কিš‧ আপনি যখন কথা বলেন, তখন কেউ হয়তো চলে যায়নয়তো অন্য কোনো কথা বা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।এর কারণ কী? আপনার জ্ঞান-বুদ্ধি, শিক্ষা-দীক্ষা, পদ-পদবী সবক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা সত্তে¡ও কেন সবাই তার কথা শুনে মুগ্ধ হয়? আর কেন আর আপনার কথা শুনতে বিরক্তিবোধ করে? আমি একজন বাবার কথা জানি, যাকে দেখলে তার সন্তানেরাআনন্দিত হয়। সবসময় তার কাছে কাছে থাকে। তাকে হৃদয় দিয়েভালোবাসে। অথচ অন্য একজন বাবার অব¯া এমন যে, তিনি সন্তানদের কাছে ডাকেন অথচ তারা বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে দূরে সরে থাকে। এমনটা কেন হয়? দুজনই তো পিতা। তারপরও কেন এত পার্থক্য? সুতরাং কীভাবে মানুষের মন জয় করে জীবনকে উপভোগ করতেহয়, আমরা এ গ্রšে সেসব জীবনচরিত্র ও আচার-আচরণ সম্পর্কে জানব।আমরা জানতে চেষ্টা করব, কীভাবে মানুষকে আপন করে নিতেহয়, কীভাবে সব ধরনের মানুষের সঙ্গে চলতে হয়, তাদের মাঝেপ্রভাব ফেলতে হয় এবং গিয়ে ক্ষমানুভব দৃষ্টিতে দেখে তাদের ভুল- তরæটি এড়িয়ে যেতে হয়। আমরা এ বইটির মাধ্যমে আরো জানব, দুর্নীতিমুখী ও দুশ্চরিত্রবান লোকদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করতে হয়। তাদেরকেকীভাবে সৎ পথে আনতে প্রভাবিত করতে হয়। এছাড়া আরো অনেক কিছুই আমরা বইটির মাধ্যমে শিখতে পারব ইনশাআল্লাহ! আমাদের এ পথে আপনাকে স্বাগতম