কবি আব্দুল্লাহ্ জামিল সমকালীন বাংলা কবিতার একজন সনিষ্ঠ সাধক। একাধারে তিনি কবি, সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার ও পেশায় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। তাঁর কবিতা পাঠ এক ধরনের নিমগ্নতার ঘোরে পরিভ্রমণ করায়। বন্ধুত্ব বা আন্তরিকতার সুবাদে হোক, তাঁর প্রায় প্রতিটি গ্রন্থ ও কবিতা পাঠের সুযোগ হয়েছে। তাঁর কবিতার প্রধান প্রবণতা হলো, যেন তিনি কবিতায় সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত থেকে অত্যন্ত বলিষ্ঠ উচ্চারণ করেন। অত্যন্ত কমনীয় সুরে গভীর ও উচ্চকিত বোধের চূড়ান্তে পৌঁছে দেন পাঠককে। তাঁর কবিতাগুলি আকারে ছোট কিন্তু বিষয় ও উচ্চারণে ব্যাপক প্রেক্ষাপট। গৌরী সিরিজ তাঁর কবিতার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। তাঁর পাঠকগণ হয়তো অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়েছেন যে, এই গৌরী কবিকে আচ্ছন্ন করেছে। গৌরী সিরিজের প্রতিটি কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি স্বদেশ, সমাজ, বিশ্ব রাজনীতি থেকে মানবমন, একাকিত্ব, বিচ্ছিন্নতা, প্রেম, বিরহ, বিষাদ কিংবা অস্তিত্ব-অনস্তিত্বের টানাপোড়েনও ধারণ করেছেন। গৌরী সম্মুখে বসে নেপথ্যে রেখেছেন এক বিশাল কালখণ্ড, যা কবির ভাবনায়-মননে। ‘নির্বিকার কফির ঘ্রাণ’ গৌরী সিরিজের তৃতীয় পর্ব। এ গ্রন্থের কবিতাগুলো ঋজু, নির্মেদ ও সাবলীল। ছন্দোবদ্ধ কবিতাগুলো কখনো কখনো প্রবল শক্তিশালী হয়ে কবির শক্তিকে ইঙ্গিত করেছে। আব্দুল্লাহ্ জামিলের কাব্যভাষা সমসাময়িক ও শব্দ নির্বাচনে তিনি সতর্ক পরিব্রাজক। কবিতার মেটাফোর ও চিত্রকল্পগুলো নতুন ভাবনাতাড়িত কবির গভীর অনুধ্যান। --- কবি ওবায়েদ আকাশ
আব্দুল্লাহ্ জামিল পেশায় একজন হৃদরোগ চিকিৎসক। ১৯৬১ সালের ২৬ জুলাই নরসিংদী জেলার রায়পুরার নোয়াবাদ গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন শ্রাবণ মাসের এক তুমুল বর্ষার দিনে। ছোটবেলায় গ্রামে কাটিয়েছেন কিছুদিন, যার স্মৃতি আজো তাঁর কবিতায় দেখা যায়। তিনি SSC (১৯৭৯) ও HSC (১৯৮১) পাস করেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে। ১৯৮৮ সালে শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, বরিশাল থেকে MBBS পাস করেন। তারপর FCPS (Internal Medicine) ও MD (Cardiology) ডিগ্রি অর্জন করেন যথাক্রমে ১৯৯৭ ও ২০০১ সালে। বর্তমানে Consultant- Interventional Cardiology হিসেবে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছেন। ছাত্রজীবন থেকে লেখালেখি শুরু। পেশাগত প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে গিয়ে লেখালেখি থেকে বহু বছর দূরে ছিলেন। গত আট বছরের কিছু বেশি সময় ধরে নিয়মিত লেখালেখি করছেন।