অনুসন্ধিৎসু বাবা-মা, অভিভাবক ও সম্মাণিত পাঠকগণ যাতে কোমলমতি শিশুর জীবন গঠণে মনস্তাত্বিক বিকাশ ও পারিবারিক শিক্ষা এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বিষয়ে সম্যক ধারণা পেতে পারেন সে লক্ষ্যে এ বইটিকে চারটি অধ্যায়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমন- প্রথম অধ্যায়ে শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে পারিবারিক শিক্ষা সূচারুরূপে সম্পাদনের লক্ষ্যে সন্তানের পরিচর্যা, শিশুর নৈতিকতা গঠন, সমাজে পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের প্রয়োজনীয়তা, নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ অর্জনে পরিবারে বাবা-মায়ের করণীয়, বাস্তব প্রেক্ষাপটে বর্তমান সমাজে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবস্থা, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়, অবক্ষয়ের কারণ এবং অবক্ষয়রোধে পারিবারিক সুশিক্ষা ও তার চর্চা ইত্যাদি বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যাতে পাঠক এ সংশ্লেষে সহজেই প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা পেতে পারেন। দ্বিতীয় অধ্যায়ে শিশুর ব্যাক্তিত্ব গঠনে বাবা-মা কর্তৃক কেমন লালন-পালন শৈলী গ্রহণ করতে হবে, এ ধরনের শৈলী কত প্রকার হতে পারে, কোন শৈলীটি সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকরী, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তানের জন্য কোন ধরনের শৈলী বেশি কার্যকর, লালন-পালন শৈলী বা প্যারেন্টিং স্টাইল যথাযথভাবে সন্তানের জন্য কার্যকর করার লক্ষ্যে বাবা-মা কে কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে, যথাযথ শৈলী অনুসরণের পরেও যদি সন্তান বিপথে চলে তখনই বা করণীয় কি, চলমান শৈলীতে বাবা-মা বাড়াবাড়ি কিছু করে বা হেলিকপ্টার লালন-পালন শৈলী অনুসরণ করেই ফেলেন তখন কী করতে হবে, লালন-পালন শৈলীতে কিভাবে কন্যা সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলা যায় ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে লালন-পালন শৈলীর আওতায় শিশুকে যথাযথ যৌন শিক্ষা, ভালো স্পর্শ, মন্দ স্পর্শ, শারীরিক অঙ্গের সঠিক নাম বা পরিভাষা, আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মান ও আত্মমূল্যায়নের শিক্ষা প্রদান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিহতকরণ, শিশুদের বয়সভিত্তিক যৌন শিক্ষা, ছেলে সন্তানেরও এ সংশ্লেষে নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ের উপর সহজ, শোভন ও বোধগম্য ভাষায় আলোকপাত করা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে লালন-পালন শৈলীর মাধ্যমে শিশুকে যৌন হয়রানি বা যৌন নিপীড়ন বিষয়ে সচেতনকরণ, বিশেষ করে যৌন হয়রানি বা যৌন নিপীড়ন কী, কেন নিপীড়ন হয় তার মনো-সামাজিক তথা মনস্তাত্বিক কারণ, বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সংশ্লেষে উদ্ভাবিত তথ্য-প্রযুক্তির মিথস্ক্রিয়ায় সৃষ্ট ভার্চুয়াল জগৎ এর সাথে শিশুর জীবনকে কিভাবে সমন্বিত করা যায়, শিশুর যৌন শিক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ কি ভূমিকা রাখতে পারে, যৌন হয়রানি বা যৌন নিপীড়িত শিশু বা কিশোর-কিশোরীর প্রতি সমাজেরই বা ভূমিকা কী হতে পারে ইত্যাদি বিষয়সমূহ বিস্তারিতভাবে উপস্থাপনপূর্বক বিদ্যমান সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় এবং প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।