ছোটবেলা থেকেই আমাদের মনের মধ্যে একটা জিনিস গেঁথে আছে, সেটা হলো গণিত মানেই বিচ্ছিরি সব সুত্র মুখস্থ করা আর হিবিজিবি সব অংক করা, গণিত মানেই মোটা চশমা পরা কাঠের বড় স্কেল হাতে রাগী স্যারের থমথমে ক্লাস। সুত্র মুখস্থ না পারলেই পিঠের উপর বেতের বারি বা ঠাস ঠাস শব্দে দুইগাল লাল হয়ে যাওয়া। কিন্তু এর বাইরেও যে গণিতের একটা সৌন্দর্য আছে, গণিতে একটা মুগ্ধতা আছে, গণিতের মাঝে জীবনের ভাষা আছে, গণিতে আছে সুন্দর চিন্তা করার উৎস এই জিনিসটা আমরা কখনো ভেবে দেখিনি। জনপ্রিয় গণিত লেখক "চমক হাসান" ভাই যথার্থই বলেছেন "সুন্দর চিন্তা করা অনেক আনন্দের ব্যাপার। খাবারের সংস্থান থাকলে শুধু চিন্তার আনন্দেই একটা অর্থ বহ জীবন পার করে দেয়া যায়।আর গণিত হলো গুছিয়ে চিন্তা করার ভাষা, বিজ্ঞানের ভাষা" গণিত সম্পর্কে জানার প্রয়াস ছিলো একদম স্কুল পর্যায় থেকে। সেই লেভেলের গণিতের ছোট ছোট জিনিস চিন্তা করতাম। স্যারদের অনেক প্রশ্ন করতাম কিন্তু অনেক উত্তর পেতাম, অনেক উত্তর পেতাম না। তখন ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের জন্য এতোটাও সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি। যার ফলে ইন্টারনেট থেকেও উত্তরগুলো পাবার কোনো উপায় ছিলো না। সেই থেকেই মনের মধ্যে তীব্র ইচ্ছা ছিলো এগুলোর উত্তর বের করা।বড় হতে হতে আস্তে আস্তে প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে থাকলাম।আস্তে আস্তে বুঝতে শিখলাম গণিত মানে জীবনের ছন্দ, জীবনের ভাষা। যেমন অনেকে বলেন ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা হলে গণিত হলো সার্বজনীন ভাষা। ইংরেজিতে শুধু মানুষ কথা বলে কিন্তু গণিতে মানুষ ছাড়াও কম্পিউটার, মেশিন এবং হয়তোবা এলিয়েনরাও কথা বলে। গণিতের এই সৌন্দর্যকে অনুধাবন করতে হলে গণিতকে বুঝতে হবে, সৌন্দর্যকে খুঁজতে হবে,শুধু কয়েকটি ছক বাঁধা সুত্র আর উত্তর মেলানো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, খুঁজতে হবে এই সুত্রের উৎস্যকে,কেন হলো,কিভাবে হলো,কোথা থেকে আসলো এরূপ প্রশ্নগুলো জানার প্রচন্ড বাসনা মনের মধ্যে তৈরি করতে হবে।আশা করি আপনার মনের এই প্রচন্ড তৃষ্ণাকে তৈরি করে দিবে আমার বই "সংখ্যা সাহিত্য(গণিতের ভেতরের রহস্য)"। সাথে ধরিয়ে দিবে কতগুলো গণিতের সৌন্দর্যকে। সবশেষে মহান আল্লাহর তাআলার প্রতি অশেষ শুকরিয়া যে তিনি আমার অনেক গুলো নিদ্রাহীন রাতের পরিশ্রমকে সফল করেছেন।
আব্দুল কাদের। জন্ম ৫ জানুয়ারি ২০০১, বাবা মোঃ জালাল মিয়া, মা লাভলী বেগম। বাবার কাজের সুত্রে জন্ম ঢাকাতেই, ধানমন্ডির রায়ের বাজার এলাকায়। এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা নিজের গ্রাম রাজবাড়ী জেলায়। কলেজ ছিলো নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ। এখন গণিতে স্নাতক সম্পূর্ণ হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণ। প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে লেখালেখির শুরু। নিজের ১ম প্রকাশিত বই 'সংখ্যা সাহিত্য' (গণিতের ভেতরের রহস্য)। তুলনামূলক কঠিন গণিতের গভীর জ্ঞানটা সাহিত্যের মত সাবলীলভাবে বোঝা, জানা এবং অন্যদের জানানোর এই প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে এটাই লেখকের কামনা।