ফ্ল্যাপে লিখা কথা ২০০৯ সালের জুন মাসে সপ্তা দুয়েবেকের জন্য ক’জন বন্ধুর সঙ্গে আবিদ ফায়সাল দার্জিলিং ও নেপাল ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেই ভ্রমণের ফিরিস্তি নেপাল দার্জিলিং নমস্তে। ভ্রমণকাহিনি সাধারণত তিন রকমের হয়। প্রথমটি হচ্ছে আমিসর্বস্ব বর্ণনা, অর্থাৎ উত্তম পুরুষের চোখে ধরা পড়া দৃশ্য-ঘটনা-জীবন, যার কতটা তিনি দেখাবেন, কেন দেখাবেন, সে রহস্যের চাবি তাঁর হাতে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে বর্ণনাপ্রধান, যেখানে স্থান ও ঘটনার পেছনের ভূগোল-ইতিহাস পূর্বাপরভাবে সাজানো। এ দুই ধরনের ভ্রমণকাহিনীতে পাঠক দূরেই থাকেন; তাকে যতটা আহবান করেন লেখক, তার বাইরে যাওয়া তার সম্ভব হয় না। কিন্তু তৃতীয় এরকমের ভ্রমণকাহিনিও আছে, যা পাঠককে ভ্রমণসঙ্গী করে নেয়, তাকে নিয়ে যায় সব দৃশ্য-কল্প-স্থান-সমাজের অভ্যন্তরে। অল্প কথায় এই ভ্রমণকাহিনী অনেক সংবেদী বর্ণনা হাজির করে। এবং পড়তে পড়তে পাঠকের মনে হয়, বেশতো ঘুরতে পারছি, এটা-সেটা দেখতে পারছি লেখকের সঙ্গে, তাঁরই সফরে গিয়ে। আবিদ ফায়সালের নেপাল-দার্জিলিং ভ্রমণ এই শেষোক্ত শ্রেণীর। খুবই প্রাণবন্ত বর্ণনা। ভাষাটা তাঁর একেবারে নিজস্ব; মেদহীন অথচ আকর্ষণীয়। নেপাল আমি অসংখ্যাবার গিয়েছি। কিন্তু আমারও মনে হয়েছে, আবিদের মতো যেন সব দেখা হয়নি। এতটা শক্তিশালী তাঁর দেখানোর শক্তি। আবিদের ভাষায় কৌতুক আছে, কৌতূহল জাগিয়ে রাখার ক্ষমতা আছে, এক উদার মানবিকতার ছোঁয়া আছে। এসবই যে কোনো লেখকের-শুধু ভ্রমণ লেখক নন, লেখকের জন্য ঈর্ষণীয় ক্ষমতা। আবিদ আরো নানা দেশে ভ্রমণ করলে এবং সেগুলো নিয়ে লিখবে বাংলাদেশের ভ্রমণসাহিত্য সমৃদ্ধ হবে। তাঁকে অভিনন্দন। ----সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম--
জন্মতারিখ ও জন্মস্থান: ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৭২ ভাটিপাড়া, দিরাই, সুনামগঞ্জ। বাবা : মােহাম্মদ নুরজালাল ভুইয়া, মা : আবিদুন্নেসা প্রকাশিত গ্রন্থ ঘর, কেন বাড়ি ছেড়েছিলে (কবিতা, ২০০৫) মানুষ হবার আগে গ্রামে যেতে হয় (কবিতা, ২০১৭) নেপাল দার্জিলিং নমস্তে (ভ্রমণআখ্যান, ২০১১)।