ফ্ল্যাপে লিখা কথা কমলাপুর রেলস্টেশনে বসে আছি আমি।কোন ট্রেনে উঠব বুঝতে পারছি না। কিন্তু এটা ঠিক, আমি আর বাসায় ফিরে যাচ্ছি না। মা-বাবা বুঝুক আমি না থাকলে কেমন মজা। আমি এমনভাবে ঘোরাফেরা করছি কেউ যাতে আমাকে সন্দেহ না করে।বাসা থেকে রাগ করে চলে এসেছি, এটা কাউকে বলা যাবে না।এক ভদ্রলোক আমার পাশে এসে বসলেন।পত্রিকায় চোখ বোলাতে বোলাতে বললেন, ‘তা, কোথায় যাওয়া হবে?’ আমি বললাম, ‘কোথাও যাওয়া হবে না।’ভদ্রলোক বেশ মজা পেলেন যেন। বললেন, ‘তা এখানে আসা হয়েছে কেন?’ ‘ইচ্ছা হলো তাই।’ আমি বলি।তিনি আমার দিকে পত্রিকার একটি পৃষ্ঠা এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘বাংলা পত্রিকা পড়া হয় নিশ্চয়ই?’ পত্রিকা হাতে নেওয়ার পর একটি সংবাদে আমার চোখ আটকে যায়। ‘ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র অপহৃত। পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি।’ আম সংবাদটি গড় গড় করে পড়ে ফেলি।‘আরে, একে তো আমি চিনি। রাসেল।’ সংবাদটি পড়ার পরই আমার কেমন একটু ভয় ভয় করতে থাকে।লোকটির দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাই। ‘তা আমরা তো কিছু খেতে পারি নাকি?’ এ কথা বলেই তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে চিপস বের করেন।টেলিভিশনে দেখা আমার একটি সতর্কবাণীর কথা মনে পড়ে।‘রাস্তাঘাটে অপরিচিত কারও দেওয়া কিছু খাবেন না।’ তবে ক্ষুধা লেগেছে প্রচুর।হাতে একটা টাকাও নেই।কিন্তু আমি বাসায়ও ফিরে যাব না। সকাল নয়টায়া বাসা থেকে বের হয়েছি।এখন বাজে প্রায় ১২টা। মা নিশ্চয় কান্নাকাটি করেছেন। বাবা নিশ্চয় নানা জায়জায় খোঁজখবর নিচ্ছেন।হাসপাতাল-থানায়ও যেতে পারেন।লোকটির দিকে তাকিয়ে বয়স্কদের মতো বললাম, ‘তা কী করা হয়?’ লোকটি আমার কথা গুনে খুশি হলেন।আমার দিকে তাকিয়ে সামান্য হেসে বললেন, ‘কিছুই করা হয় না। ঘুরে বেড়াই। আজ এখানে তো কাল ওখানে।’ ‘আমিও তো লোকটির মতো হতে পারি।’
সূচিপত্র *ভূতের পক্ষে বিপক্ষে *প্রতীক যখন সুমন *যাদুর রিকশা *ক্ষুদে গোয়েন্দা *সাধ্য পাখি *দীপন ও অন্যরা *বটুল কাহিনী *সাফিনের কথা *রোদ্দুরের পিছনে পিছনে আনিস সাহেবের বাসা
দন্ত্যস রওশন ( সাইদুজ্জামান রওশন) জন্ম ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬২, ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বকচর গ্রামে। মা আজিমা খাতুন, বাবা আবদুল ওহাব। শৈশব-কৈশোর কেটেছে গ্রামে। কবিতার মধ্য দিয়ে লেখালেখির সূচনা। পরে গল্প-উপন্যাস ও শিশুসাহিত্য রচনায় সক্রিয় হন। শিশু কিশোরদের বইয়ের সংখ্যা ৫০। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭৫। মুক্তিযুদ্ধের কিশোর উপন্যাস নোটুর সেভেনটি ওয়ান-এর জন্য অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। নোটুর একটি রাইফেল মুক্তিযুদ্ধের শিশু কিশোর উপন্যাসের জন্য পান অধ্যাপক খালেদ শিশুসাহিত্য পুরুস্কার। কিশোর গল্পগ্রন্থ পরিদের নাচের টিচার-এর জন্য পান ফান কেক আনন্দ আলো পুরস্কার। স্ত্রী ডা. ফারহানা মোবিন, ছেলে অনুভব অভিলাষ জামান। উল্লেখযোগ্য সম্পাদনা, ১৯৭১ ঘাতক দালালের বকতৃতা ও বিবৃতি। গুন্টার গ্রাস সংকলন,একাত্তরের অগ্নিকন্যা। অণুকাব্য লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। কবিতাপত্র আমলকীর সম্পাদক। মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭৫। পেশা: সাংবাদিকতা।