বর্তমান বিশ্ব বহুদূর এগিয়ে গেছে আধুনিকতা আর অপসাংস্কৃতিতে। জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান আর উন্নতির উৎকর্ষে। কোনো জিনিসের কমতি নেই। আবিষ্কারের আধিক্য রয়েছে। ভাষা-সাহিত্য আর বাগ্মিতাপূর্ণ কথার চমক রয়েছে। সবকিছুর প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও দেশ ও জাতি সমগ্র বিশ্ব আত্মিক উন্নতির বিপ্লব ঘটাতে এবং স্বচ্ছ প্রাণের বিস্তার ঘটাতে অনেক পিছিয়ে আছে। এই সমাজ ও জাতির কাছে হকের বার্তা কে পৌঁছাবে? উন্নতি-অগ্রগতির রৌদ্রপথে তারা আপনার ধর্মতাত্ত্বিক কথা গ্রহণ করবে না। আপনার প্রভুত্ব জ্ঞানের রশ্মিতে প্রভাবিত হবে না। আপনাকে ইসলামি জ্ঞানের আলোকে এমন দৃষ্টান্ত ও উন্নত ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে হবে, যার আকর্ষণে সকল অপশক্তি পশ্চাৎপদ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। ফলশ্রুতিতে তাদের সামনে উন্মোচিত হবে সফলতার রাজপথ। দূরীভূত হবে ঘন আঁধার রজনীর, দেখা মিলবে দীপ্তিময় নতুন ভোরের। ইসলামি বিপ্লব ও উন্নত সমাজ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন নববী জ্ঞানের রশ্মি এবং আকাবির ও আসলাফের জ্ঞান-সাধনা। কারণ তাদের জীবনবৃত্তান্তে রয়েছে সাধারণ মানুষের পথ চলার খুরাক। জীবন গঠনের আদর্শ নীতি ও শিক্ষা। কেননা আমাদের আকাবির ও আসলাফগণের মাঝে ইলম ও আমলের সুরুচিবোধ, কুরআন ও হাদিসের প্রকৃত নীতি ও দর্শন রয়েছে। 'উলামায়ে আহনাফ কে হায়রাত আঙ্গেজ ওয়াকিয়াত' গ্রন্থটি দ্বারা অনুমান করা যায় আল্লাহ তাআলা হানাফি আলেমদেরকে দিয়েছিলেন অতুলনীয় যোগ্যতা ও উন্নত বৈশিষ্ট্য। তাদের দ্বারা দীন ও ধর্মের অভাবনীয় উন্নতি সাধন হয়েছিল। সংরক্ষিত হয়েছিল কুরআন ও হাদিসের প্রকৃত শিক্ষা। প্রসার লাভ করেছিল ইলমে নববীর আদর্শ। তারা যদি জ্ঞান-সাধনায় আত্মনিমগ্ন না হতেন, জ্ঞান-সমুদ্রে ডুব দিয়ে মুক্তো কুড়িয়ে না আনতেন অর্থাৎ কুরআন ও হাদিসে ইজতিহাদ ও ইসতিমবাত করে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম মাসআলা বের না করতেন, তাহলে আজ মুসলিম উম্মাহকে চরম দুর্দিনের প্রহর গুনতে হতো। তাদের ইখলাস ও লিল্লাহিয়্যাতের কারণেই মুসলিম উম্মাহ আজ নিষ্কৃতি পেয়েছে সকল প্রকার দুর্ভোগ হতে। তারাই হলো শরীয়তের মেরুদণ্ড। আল্লামা ইবনে আবদুল বার রহ. বলেন, যে ব্যক্তি সাহাবায়ে কেরাম ও তাবিয়িদের পর আইম্মায়ে ফুকাহার ফাজায়েল পড়ে এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্বের ওপর অবগত হয়, তাহলে এটা তাদের উত্তম কর্মে শামিল হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাদের প্রতি ভালোবাসা ও মুহাব্বত দান করুন। ইমাম ছাওরি রহ. বলেন, সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের আলোচনার সময় আল্লাহ তাআলার রহমত অবতীর্ণ হয়