কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। সতর্ক চোখে তাকালাম আশপাশে। না, সন্দেহ করার মতো কিছুই টের পেলাম না। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এলাম খোলা ময়দানে। ওদের কাছে গিয়ে দেখি একজন এখনও বেঁচে আছে। ছটপট করছে যন্ত্রণায়। বিষ্ময়ভরা চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এভাবে আমাদের দিকে তাকিয়ে থেকে কি ভাবলো সে? কিছুই বুঝতে পারলাম না। তার কাছে বসে বিদ্রুপ করে বললাম, ‘কী? কেমন মজা লাগলো? মাকে এভাবে বিক্রি করতে মনে একটুও মায়া লাগলো না?’ জুনেদ ওর কপাল বরাবর রাইফেল তাক করে ধরলো। আমি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। ওর দিকে চেয়ে বললো, ‘যাও, পরকালে বাকিটুকুর হিসেব—নিকেশ হবে।’ বলে একটি মাত্র গুলি করলো কপালে। ফিনকি দিয়ে রক্ত এসে পড়লো আমার মুখে। আঙুল দিয়ে সেই রক্ত মুছলাম। পুরো ঘটনা দেখে আমি তো রীতিমতো হতভম্ব! এটা কি করলো জুনেদ। অবাক হয়ে তাকালাম তার দিকে, ‘তোমার তো সাহস কম না! এভাবে খুন করতে পারলে! একটুও হাত কাঁপলো না!’ ‘বন্ধু, ও আমার নিজের শত্রু হলে হয়ত ক্ষমা করে দিতাম। কিন্তু সে দেশের শত্রু। জন্মভূমির শত্রু। বিশ্বাস ঘাতককে মারতে মায়া থাকলে নিজের ঈমান যে দুর্বল, সেটাই প্রমাণ হবে। আমি দেশ প্রেমের পরীক্ষায় ফেল করতে চাই না। মা—বোনের ইজ্জতের মূল্য আমার কাছে বেশি। আর শুনো, যুদ্ধে ওতো মায়া—মমতার সুযোগ নেই। না হলে যুদ্ধ হবে না।’