খুব সম্ভবত আমার এখন পিথাগোরাসের শিষ্য হয়ে তার জাহাজে বসে থাকার কথা ছিল। অমূলদ সংখ্যা আবিষ্কারের অপরাধে হিপাসাসকে যখন সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়, সেই দৃশ্য চাক্ষুষ দেখার ইচ্ছে ছিল। অথবা প্লবতা আবিষ্কারের পর নগ্ন আর্কিমিডিস যখন 'ইউরেকা ইউরেকা' বলতে বলতে রাজ দরবারে ছুটে আসছিলেন, তখন রাজা হিয়োরের সভায় বসে সেই দৃশ্য দেখার ইচ্ছে ছিল। কিংবা ডাইনোসরের গায়ের পশম, ঢাকা আবিষ্কারকের নাম, নিউটনের মাথায় পড়া আপেলের রং অথবা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া বিমানের দশাসহ আরো অনেক কিছু দেখা যেত। তার বদলে আমি বসে আছি গুলিস্তানের জ্যামে। একটা দোতলা বাসের নিচতলায় বসে বাইরে হকারের ডাক আর মানুষের ব্যস্ততা দেখছি। আমার জীবনে এই দৃশ্য এই প্রথম নয়। গত দেড় হাজার বছরে এই দৃশ্য আমি এই নিয়ে বত্রিশ হাজার দুইশত চার বার দেখছি। একটু পর যে লোকটার মোবাইল চুরি হবে, তাকে আমি আমার চোখের সামনে মোবাইল চালাতে দেখছি। কিন্তু লোকটাকে সাবধান করার ক্ষমতা আমার নেই। আসলে দুঃখ বয়ে বেড়ানো ছাড়া এই জীবনে আমার আর করার কিছুই নেই। আমার কানে সস্তা একটা ইয়ারফোন গোঁজা। তার একটা পাশ নষ্ট। আরেক পাশের কানে রবীন্দ্র সংগীত বাজছে, 'আমি চিনি গো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশিনী...'
বসন্তের কোনো এক রাতে আমার জন্ম হয়েছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। বাবা আকরাম হোসেন এবং মা ফাতেমাতুজ্জোহরা। পৈত্রিক নিবাস পিরোজপুর হলেও, বেড়ে উঠেছি রাজধানী ঢাকায়। আমার বিচিত্র জীবনের সেখানেই শুরু। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও জীবন তার বৈচিত্র্য ধরে রেখেছে। প্রাইমারি স্কুল, নূরানি মাদরাসা, আলিয়া মাদরাসা সব ঘুরে ২০১৪ সালে হিফজুল কুরআন সম্পন্ন করেছি আল আবরার হাফেজিয়া মাদরাসা থেকে। আলহামদুলিল্লাহ। ২০২১ সালে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে বর্তমানে পড়ালেখা করছি নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর কম্পিউটার সাইন্স ডিপার্টমেন্ট-এ। জীবনে সবসময় ভিন্ন কিছু করার স্বপ্ন দেখেছি। সেই স্বপ্নের জের ধরে অতিভূজ এবং অতিবুকের যাত্রা শুরু। অতিশয় আড্ডা নামক লাইভ-শো এবং অনলাইন সাহিত্য ম্যাগাজিন অতিসৃজন সেই স্বপ্নের অংশ। স্বপ্ন দেখি, অতিভূজ একদিন অনেক বড়ো হবে। নিজের সাফল্যের ঝুলিতে এত এত প্রাপ্তি নিয়ে গর্ব করে বলবো, 'আমার সফলতার পিছনে সবচেয়ে বড়ো অবদান আমার মায়ের।'