মাথার ওপরে গোল থালার মতো চাঁদ। অদ্রিকদের চোখের সামনে বগা লেক। তারা মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে লেকের শান্ত ও স্নিগ্ধ পানি। কিছুক্ষণ পর অদ্রিক তাকাল থালার মতো বিশাল চাঁদটির দিকে। নৈসর্গিক দৃশ্যে যখন দুজনই বিমোহিত, তখন অকস্মাৎ একটি বস্তু দেখে অদ্রিকের প্রাণ আঁতকে উঠল! খসে পড়া তারার মতো কিছু একটা ছুটে আসছে তাদের দিকে। ধীরে ধীরে আলোকবিন্দুর আকার-আকৃতি বাড়তে থাকল। কয়েক মুহূর্ত অদ্রিকের মুখ থেকে কোনো কথা বেরোল না। লেক এলাকা আলোকোজ্জ্বল হয়ে ওঠায় তালুত ইতোমধ্যেই আকাশের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। তাদের দিকে ছুটে আসা আগুনের গোলাটি ক্রমশ বিশালকায় হয়ে উঠছে! অদ্রিক ও তালুত দৌড়াল বমপাড়ার দিকে। দৌড়াতে দৌড়াতে দেখতে পেল, বম সম্প্রদায়ের মানুষজন অস্ত্রশস্ত্র হাতে বেরিয়ে আসছে। কারো জানা নেই, কী ঘটছে! দেখতে দেখতে আকাশ থেকে পড়া আগুনের গোলা যেন পাহাড়ের মতো বড় হয়ে গেল। চারদিক দিনের চেয়ে বেশি আলোকিত হয়ে উঠল; চোখ ধাঁধিয়ে দেয় এমন আলো! সঙ্গে কানে আসছে জেট ইঞ্জিনের মতো আওয়াজ এবং ধীরে ধীরে আওয়াজ বিকট হচ্ছে। অদ্রিক ও তালুত হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে কষ্টদায়ক মৃত্যুর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করল। ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটবে এখনই। একদিকে অদ্রির দুঃসাহসী অভিযানের অভূতপূর্ব রোমাঞ্চ, অন্যদিকে বুদ্ধিদীপ্ত অ্যাডভেঞ্চারের আনন্দে ভরপুর এই কাহিনি।
সাহিত্যের প্রতি আসিফ মেহ্দীর ঝোঁক ছাত্রজীবন থেকেই। দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ ও ‘রস+আলো’তে লেখার সুবাদে রম্যলেখক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন আগেই। সেই সূত্রে প্রথম বইটাও রম্যগল্পের। ‘বেতাল রম্য’ নামের সেই বইয়েই আসিফ মেহ্দী লাভ করেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। এরপর একে একে প্রকাশিত তাঁর প্রতিটি বই শুধু পাঠকপ্রিয়তাই লাভ করেনি, উঠে এসেছে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায়। সাম্প্রতিক সময়ে লিখছেন দেশসেরা কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’তে। ব্যঙ্গ আর হাসির সঙ্গে গভীর জীবনবোধের প্রতিফলন ঘটিয়েই আসিফ মেহ্দী এ সময়ের জনপ্রিয় লেখকদের কাতারে নিজের অবস্থানটা বেশ পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন।
এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই ঢাকা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্ট্যান্ড করেছেন আসিফ মেহ্দী। বুয়েট-এ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় নিজ ক্যাডারে ১ম স্থান অধিকার করে বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের গবেষণা ও গ্রহণ কেন্দ্রে সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সহধর্মিনী মৌবীণা জ্যাকলিন বারি পেশায় ডাক্তার।