ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা প্রতিটি মানুষের পথ চলাই একদিন শেষ হয়। সেই সমাপ্তি কোথায়, কিভাবে, কথন হবে তা যদি আমরা নির্ভূল বলে দিতে পারতাম তাহলে বেঁচে থাকার রোমাঞ্চ থেকে আমরা বঞ্চিত হতাম।দেড় দশক আগে উচ্চ শিক্ষার তাগিদে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলাম। শিক্ষা শেষে কাজের তাগিদে ঘুরেছি আমেরিকার নানা প্রান্তরে কিন্তু যে কারণেই হোক কখনো সেভাবে কোথাও জড়িয়ে পড়া হয়নি।ভাগ্যের চক্রে পড়ে শেষ পর্যন্ত পাড়ি জমাতে হলো কানাডায়।নতুন বাস পাতলাম দুনিয়া খ্যাত টরোন্টো শহরে।খুব শীঘ্রই আবিষ্কার করলাম এক ফেলে আসা জগত যেখানে আচমকা হাতছানি দিয়ে ডেকে ওঠে বাল্যকালের কোন বন্ধু যার সাথে দেখা নেই দুই যুগ, অথবা ড্যাডফোর্থ এ্যাভেনিউয়ের বাংলাদেশী দোকানে বাজার করতে গিয়ে থকমে দাঁড়াই ইউনিভারসিটি জীবনের দুই বন্ধুকে পেয়ে, আড্ডা জমে ওঠে কিছুক্ষণের জন্য, ফেলে আসা দিনগুলোর মত।অসংখ্য চেনা মানুষের সান্নিধ্যে ভূলেই গেলাম স্বদেশ ছেড়ে বাস গেড়েছি অন্য এক গোলার্ধে।এটাই হচ্ছে টরোন্টোর বেশিষ্ট্য। এখানে একবার যে পা রেখেছে তাকেই সে হৃদয়ের সমস্ত অর্ঘ্য দিয়ে নিজের করে নিয়েছে। এখানেও দুঃখ, বেদনা, যন্ত্রণা আছে; অন্যায় অবিচার পাপ, লোভ, অনাচার, নোংরা রাজনীতি সবই আছে; কিন্তু সে সব কিছুকে ছাপিয়ে যেটা সবচেয়ে নজরে পড়ে তা হচ্ছে এর উষ্ণতা। মায়ের কোলে ছোট্ট এক শিশুর মত সেই উষ্ণতায় আমি যেন চির বন্দী হয়ে গেছি।এই আমার ঘর, এই আমার সংসার।বাংলাদেশ রয়ে যাবে হৃদয়ে আমৃত্যৃ, কিন্তু আমার জীবন কেটে যাবে সম্ভবত এই ভূমিতেই, এই নতুন দেশে, এই পরিচিত জনতার মাঝে।
সূচিপত্র *Spider Man এবং একটি বাড়ির স্বপ্ন *আগওয়া ক্যানিয়ন *মৎসের এক দিন *নায়েগ্রায় পিকনিক *সুখে থাকলে ভূতে কিলায় *নব্য যুগের সন্তানেরা *কুটিরে তিনদিন *এই শহরে *তরমুজ জোড়া লাগায়ে দাও *CN Tower উচ্চ করি শির *পরোটা, সাধের পরোটা *ষোল আনাই মিছা
জন্ম খুলনা শহরে। বর্ণাঢ্য শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে শহরে-গ্রামে, দেশে-বিদেশে। বন্দী সৈনিক পিতার (ক্যাপ্টেন ডাক্তার) সঙ্গী হয়ে। তল্কালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বন্দী শিবিরে কেটেছে বাল্যকালের বেশ কিছুটা সময়। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন মেধাবী ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এপ্লায়েড ফিজিক্স ও ইলেকট্রনিক্সে কৃতিত্বের সঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান উচ্চ শিক্ষার্থে। ওকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, মিশিগান থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এম.এস শেষ করে উত্তর আমেরিকাতেই কম্পিউটার পেশায় জড়িয়ে পড়েন এবং কানাডায় স্থায়ী নিবাস গেড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে তিনি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং এখন কর্মব্যবস্থতার মধ্যেও তা সাফল্যের সঙ্গে ধরে রেখেছেন। নব্বই দশকে প্রকাশিত তার সুখপাঠ্য পেপারব্যাক উপন্যাসগুলাে সহজেই সকল বয়সী পাঠকের হৃদয় জয় করেছিলাে। তার পেপারব্যাক উপন্যাসগুলো নতুন আঙ্গিকে শােভন মুদ্রণে প্রকাশিত হচ্ছে ।