বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান এবং প্রচণ্ড আদরের মেয়ে শেহনাজ স্মরণ। নানাভাই যাকে ভালোবেসে ডাকতেন দীধিতি। জীবনের আদর্শ মেনেছে দীধিতি নিজের এই নানাভাই মানুষটিকেই। ছোট্ট থেকে স্বপ্ন পুষে এসেছে অচিন দ্বীপে যাবে সে, গহিন জঙ্গল চষে বেড়াবে, সুউচ্চ পাহাড় ডিঙিয়ে চূড়ায় উঠে কাছ থেকে দেখবে আকাশটাকে, ছোটো পৃথিবীটাকে, জানবে অচিন দেশের অজানা মানুষ, তাদের সভ্যতা, সংস্কৃতিকে। জীবনের তেইশটা বছর সে একক পরিবারে বড়ো হয়েছে, স্বাধীনেচ্ছা যেখানে খুশি সেখানে ঘুরেছে, ফিরেছে। পছন্দের জামা, পছন্দের খাবার বা শখের জিনিস যাকে কখনই ঘরে অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হয়নি, ত্যাগ করাও শিখতে হয়নি। সাধারণ বাঙালি মেয়েদের মতো চায়নি দীধিতি খুব সহজেই বিয়ের শেকল পায়ে পরতে। অথচ একদিন অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিতভাবে তেইশ বছরের শেষে সীমান্তে এসে এই শেকলই পায়ে আটকে যায় ওর। তাও এমন এক পুরুষ-- যে ছিল ওর কৈশোরের সর্বনাশা আবেগ। আবার চার বছর পূর্বের অতীতে সে-ই পুরুষই ওর জীবনের সব থেকে ঘৃণ্য পুরুষ। যার দ্বারা হয়েছিল সে বিনা দোষে চরমভাবে অপদস্থ, ঝড়বৃষ্টির এক রাতে তার কাছেই হয়েছিল ওর সম্ভ্রম হারানোর শঙ্কাও। সেই পুরুষ আর সেই পুরুষের যৌথ পরিবারের বউ হওয়ার পর ঠিক কীভাবে মানিয়ে নেবে সে? আদৌ মানিয়ে নেওয়া কি সম্ভব ওর পক্ষে?
ইসরাত জাহান দ্যুতির লেখালেখির সময়টা খু্ব দীর্ঘদিনের না হলেও তবে এই লেখালেখির সঙ্গে স্বল্প দিনেই তার সম্পর্ক অনেকটা গড়ে উঠেছে আত্মিক সম্পর্কের মতো। ২০২০ এর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার প্রথম উপন্যাস 'প্রভাতকিরণ' প্রকাশ পায়। এরপর পাঠকদের মনে স্থান পেয়ে যান তিনি এই উপন্যাসের দ্বারাই৷ ফাইন্যান্স বিভাগে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি লেখক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ব্যক্তিগত জীবনের সুখ সমৃদ্ধির বাইরেও তিনি সুখ আর আনন্দ খুঁজে পান তার লেখা শব্দগুলোর মাঝে। শব্দগুলো থেকে একেকটা বাক্য তৈরি করে কয়েকটি কাল্পনিক চরিত্রের জীবনপ্রবাহের রূপ সৃষ্টিতেই তিনি পরিতৃপ্তি বোধ করেন।