“বাড়ির উঠোনে একটা লাশবাহী খাটিয়া রাখা৷ খাটিয়ার চারদিকে অসংখ্য মানুষ৷ মোহনের মা মূর্তির মতো একপাশে বসে আছে৷ মোহনের বাবা চিৎকার করে বিলাপ করছে৷ বাড়িভর্তি লোকজন হা করে তাকিয়ে আছে হিয়ার দিকে৷ কেউবা বিশ্রী ভাষায় বলাবলি করছে—মরা বাড়িতে কেউ বিয়ার সাজ সাইজা আসে? ছি!” নানান নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন অতিক্রান্ত হয়৷ পুরো জীবনটাই যেন নাট্যমঞ্চ আর আমরা অভিনেতা। কিন্তু এই অভিনয়ে কখনো কখনো আমরা ভুল করে বসি৷ আসলে আত্মঅহমিকা ও ক্রোধ মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। রাগের বশে নেওয়া অধিকাংশ সিদ্ধান্তই ভুল প্রমাণিত হয়। সবসময় নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে নেই৷ অন্যের চাওয়া-পাওয়ারও মূল্যায়ন করতে হয়৷ ভালোবাসা কারও ইচ্ছাধীন নয়। ভালোবাসা বিষয়টা সম্পূর্ণ আপেক্ষিক। হিসাবনিকাশ করে কখনো ভালোবাসা যায় না। কেউ চাইলেই ভালোবাসার মানুষ থেকে কাউকে আলাদা করতে পারে না। প্রকৃত প্রেমিক তার প্রিয়জনকে পেতে জীবনবাজি রাখতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। তাই কারও আবেগ নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ঠিক না। “চিত্রনাট্যে ভুল ছিল” উপন্যাসে কী এমন ভুল ছিল, যার কারণে জীবন দিয়েই সেই ভুলের মাশুল দিতে হলো? বক্ষ্যমাণ বইটিতে তা-ই জানতে পারবেন৷ এটি মূলত বাস্তবজীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে নেওয়া। যা আজ থেকে ২০ বছর আগে ঘটেছিল। সর্বোপরি প্রিয় পাঠক, একটি চমৎকার প্রেম-বিরহের উপন্যাস পেতে যাচ্ছেন। গল্পটি আপনার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে সে নিশ্চয়তা দিতে পারি।
১৯৭৬ সালের ১৩ই নভেম্বর শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার চরভাগা গ্রামের সম্ভ্রান্ত ঢালী বাড়িতে লেখিকা খায়রুননেসা রিমির জন্ম। পিতা ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুলাহ ঢালী। মাতা নূরজাহান বেগম। লিখতে ভালোবাসতেন ছোটবেলা থেকেই। তিনি হাইস্কুল ও কলেজ জীবনে শরীয়তপুরের সাহিত্যাঙ্গনে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে স্কুল জীবন থেকেই তিনি জাতীয় দৈনিকে লিখতে শুরু করেন। এরপরে ভোরের কাগজের পাঠক ফোরামে লিখে হাত পাকান। সেই সাথে লিখতে থাকেন ভোরের কাগজের নারী পাতা অন্যপক্ষেও। পাশাপাশি দৈনিক ইত্তেফাকের নারীপাতা মহিলা অঙ্গনেও নিয়মিতভাবে ফিচার লিখতে থাকেন। সময়টা ১৯৯৬-২০০৮ হবে। দৈনিক প্রথম আলোর বন্ধুসভাতেও লিখেছেন বেশ ক'বছর।। এরপর ২০০৫ সালে শিরিন প্রকাশনী থেকে তার প্রথম গল্প গ্রন্থ "নষ্ট দিনের কষ্ট স্মৃতি" প্রকাশিত হয়। গল্প গ্রন্থের ব্যাপক সফলতার পরে একই প্রকাশনী থেকে ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় শিশু সাহিত্য "পরীর দেশে যেতে হলে"। ২০১৪ সালে "হাতে খড়ি" প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ চুল্লাবুড়ির খপ্পরে"। ২০১৫ সালে শিখা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় আরও একটি শিশুতোষ গল্প গ্রন্থ "ভূত ছানার বিদ্যা অর্জন" ও একটি ভ্রমণ কাহিনি "দারুচিনি দ্বীপের টানে"। এই দুইটি বইয়ের ব্যাপক সফলতার পরে ২০১৬ সালে ঐ একই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় কিশোর উপন্যাস "নয়শ'ভূতের কাণ্ড"। ২০১৭ সালে গ্রাফোসম্যান প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তিনটি বই-"শালিক কন্যার বিয়ে" "রোদেলার জন্মদিন" ও "মার্বেল ভূত"। ২০১৮ সালে ঐ একই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় কাব্যগ্রন্থ মন রাতে না ফাল্গুনে ও জীবনী জীবনী গ্রন্থ এ "অধ্যক্ষ হামিদা আলী"। ২০১৯ সালে গ্রাফোসম্যান প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় উপন্যাস "আত্মিক প্রেম" ও বিশ্বসাহিত্য ভবন প্রকাশনী থেকে কিশোর গল্প গ্রন্থ "ড়তকন্যা নীলাবতী"। ২০২০ সালে বিশ্ব সাহিত্য ভবন থেকে প্রকাশিত হয় কিশোর উপন্যাস "ভূতং ভূতের কারসাজি ও লন্ডন প্রবাসী প্রকাশক ওলিউর রহমানের সম্পাদনায় তিন দেশের সাত নারী কবির কবিতা নিয়ে "সপ্তর্ষি" নামক একটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ২০২১ সালে প্রিয় প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয় কাব্যগ্রন্থ "যুবক তোমার জন্য"। পুরষ্কার প্রাপ্তিঃ ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত জাতিসংঘ দিবস সম্মাননা পান তিনি। ২০১৮ সালের ১৪ই অক্টোবর শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য সমতটের কাগজ কর্তৃক গুণীজন সম্মাননা পুরস্কার পান। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর জীবনী গ্রন্থের জন্য ১০ম জাতীয় সাহিত্য সম্মাননা পদক পান। ২০১৯ সালের ২০ মার্চ শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্য আর জে এফ সম্মাননা পান। এছাড়াও ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উদীয়মান বাংলাদেশ সংগঠনের পক্ষ থেকে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা পান। ২০২২ সালে প্রিয় প্রকাশ প্রকাশিত "যুবক তোমার জন্য" বইটির জন্য শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ সম্মাননা পান। ঐ একই বছর কথা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য দানবীর হাজী মোহাম্মদ মহসীন সম্মাননা পান। ২০২২ সালে দুই বাংলার বিজয়ের কবিতা উৎসবে পান বিশেষ লেখক সম্মাননা। ২০২৩ সালে দুই বাংলার ভাষা উৎসব উপলক্ষে পান বিশেষ সম্মাননা। ২০২৩ সালে রয়েল পাবলিকেশন কর্তৃক প্রকাশিত "ক্ষয়ে যাওয়া প্রেম" ও "মনবালকের খোঁজে" বই দুটির জন্য শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ সম্মাননা পান। প্রতি বছর বই মেলায় এই গুণী লেখিকার কমপক্ষে ৩টি করে বই প্রকাশিত হয়। ইতিমধ্যেই তিনি তাঁর চমৎকার লেখনী দ্বারা পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। লেখিকা বর্তমানে শিক্ষকতার পাশাপাশি স্বপ্ন পূরণ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আমি লেখিকার সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করছি।