সত্য এমন একটা ধারণা বা বিষয় যা সরাসরি ন্যায়, দর্শন ও ধর্মের সাথে সংযুক্ত। সত্য এমন একটা তথ্য যা সকল বিষয় স্বচ্ছতার সাথে উপস্থাপন করে। সত্যের বিপরীত শব্দ হচ্ছে মিথ্যা বা অসত্য। একই বিষয়ে সত্য একটা হলেও মিথ্যা হাজার রকম হাজারটা হতে পারে। মিথ্যা হাজারটা হলেও মজার বিষয় হচ্ছে, মিথ্যার বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ অলীক, অবাস্তব, অস্তিত্বহীন। তাই মিথ্যা দিয়ে কোন বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়, বরং মিথ্যা তৈরি করে অসংখ্য বিভ্রান্তি। যা মানুষকে কখনোই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে দেয়না। তাই মিথ্যা অবৈধ, মিথ্যা পাপ। যদি পৃথিবীতে মিথ্যার অস্তিত্ব না থাকতো তবে অধিকাংশ পাপেরই কোন অস্তিত্ব থাকতো না। আর তখনই পৃথিবীটা মানুষের জন্য হয়ে উঠতো অনিন্দ্য সুন্দর, যেন জান্নাতের এক টুকরা ফুল বাগিচা। এই অপার সৌন্দর্য মানুষের দৃষ্টিতে থাকুক বা না থাকুক, অবশ্যই থাকতো মানুষের মনে, হৃদয়ের গভীরে। যদি সত্যের আলোয় পৃথিবীর সৌন্দর্য ফুটে উঠতো, মানুষ পেত এক অপার্থিব শান্তির জীবন। কারো প্রতি কারো অবিচার, যুলুমের বালাই থাকতো না। মানুষ থাকতো মানুষের তরে। প্রত্যেকটা মানুষের মনে এই বোধ কাজ করতো যে, এই পৃথিবী সত্যের, এই পৃথিবী সুন্দরের। এখানে মিথ্যা পরাভূত, মিথ্যা বিতারিত, মিথ্যা অভিশপ্ত। তখন সত্য ছড়াতো লক্ষ কোটি আলোর ঝর্ণা। এই সত্য ও সুন্দরের পৃথিবীতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভালোবাসা। মানুষ সত্য ও সুন্দরের প্রভাবে যখন পাপমুক্ত, তখন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তারা নিজেদের বিলিয়ে দিবে পরের জন্য। নিজের ও পরের ভালোকে তারা কখনো আলাদা করে দেখবে না। রাজা-প্রজা, ধনী-দরিদ্র বলে আলাদা কোন বিশেষ শ্রেণী থাকবে না। মানুষ মানুষকে কখনো কোন কষ্ট দিবেনা, এই পৃথিবীই তখন হয়ে উঠবে সত্য, সুন্দর ও ভালোবাসার স্বর্গ কানন। তাই এই কাব্যগ্রন্থটির পরতে পরতে গাওয়া হয়েছে সত্য, সুন্দর ও ভালোবাসার বিজয় গাঁথা।