ছড়া মানেই ছন্দ, সুখ আনন্দ। ছড়া মানেই স্নোগান, মুক্তি। ছাড়া মানেই ধাঁধা, বচন যুক্তি। ছড়া মানেই গান, সানন্দ। ছড়া লতার মতো। নদীর স্রোতের মতো। পিং পং বলের মতো। ছড়া তাই শুধু ঘুম পাড়ায় না। ছড়া ঘুম ভাঙায়ও। ছড়ার সুনির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে ছড়া সম্পর্কে অন্নদাশঙ্কর রায় বলেছেন, ‘ছড়া যদি কৃত্রিম হয়, তবে তা ছড়াই নয়, তা হালকা চালের পদ্য। তাতে বাহাদুরি থাকতে পারে, কারিগরি থাকতে পারে। কিন্তু তা আবহমানকাল প্রচলিত খাঁটি দেশজ ছড়ার সঙ্গে মিশ খায় না। মিশ খাওয়ানোটাই আমার লক্ষ্য।’ তরুণ ছড়াকার শাজাহান কবীর শান্ত তাঁর এ বইয়ের ছড়াগুলোতে সেই লক্ষ্যভেদ করতে পেরেছেন। কারণ তাঁর ভাষাশৈলী, শব্দ প্রয়োগ কৌশল, অন্ত্যমিলের গাঁথুনি ছড়ার ভাব-ভাবনাকে আরও অনবদ্য করে তুলেছে। ‘রাজার যখন জ্বর’ ছোটো-বড়ো ২৮টি ছড়ার সংকলন। ছড়াগুলো শিশুকিশোর পাঠ্য। সুখপাঠ্য তো বটে। ছড়াগুলোতে রং, রূপ, ছন্দ, কল্পনা, আল্পনা, হাসি-কান্না, স্বপ্ন-জাগরণ, দুঃখ-বেদনা আছে। আছে কাব্যগুণ, শিল্পবোধ। বোধ ও বোধির মিথস্ক্রিয়া। মানুষ, পশু-পাখি, ফুল-ফল, নদী-সাগর, সমাজের নানা অসঙ্গতি-অন্যায়, উন্নয়ন-সমৃদ্ধি সবই খুঁজে পাওয়ায় যায় ছড়াগুলোতে। এজন্য ছড়াগুলো যেমন শিশুমনে আনন্দের খোরাক জোগাবে, তেমনি বড়োদেরও উজ্জীবিত করবে। ছড়াগুলো পরিপূর্ণভাবে শিশুদের উপযোগী করে লেখা। একবার পড়লে বারবার পড়তে ইচ্ছে করে। এটাই তাঁর কাব্যগুণ সার্থকতা লাভ করেছে বলে আমি মনে করি। শাজাহান কবীর শান্তর ছড়ার আলো ছড়িয়ে যাক সবখানে। ইমরুল ইউসুফ উপপরিচালক, বাংলা একাডেমি