ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা আমরা খাদ্য গ্রহণ করি বেঁচে থাকার জন্য। সুস্থ্য থাকার জন্য। রন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্য সচেতন খাদ্য তৈরি করা প্রয়োজন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ডায়েট চার্ট তৈরি হয়ে থাকে। পুষ্টিবিজ্ঞানীরাও খাদ্য গুণাগুণ নিয়ে বিস্তর নিত্য নতুন গবেষণা করছেন। নানা অসুখ-বিসুখে নানা রকম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। ডায়েট চার্ট মিলিয়ে রান্না হওয়া প্রয়োজন।দীর্ঘদিন ধরে রান্না চর্চার সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে উপলদ্ধি করতে পেরেছি স্বাস্থ্য সচেতন রান্নার কতো প্রয়োজন। যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, যারা স্বাস্থ্যসচেতন, যারা নীরোগ ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চান খাদ্য গ্রহণ তাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। দেশের বাইরে উন্নত দেশে ডায়েট ফুড নিয়ে চর্চা হচ্ছে। আমাদের দেশেও সাম্প্রতিককালে তেল কম রান্না, তেল ছাড়া রান্না, লো ক্যালরি ফুল, ডায়েড ফুড, বেশী পরিমাণ শাকসব্জী খাওয়া-এসব নিয়ে অনেক প্রচারণা চলছে। রন্ধবিদদের এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সচেতন হতে হবে। বয়স চল্লিশ পার হলেই নানা সচেতনতা দরকার। এমনকি শিশু-কিশোরদের অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়ানো উচিত নয়। ফাস্টফুড খাওয়ার ব্যাপারেও পরিমিত হতে হবে। বেঁচে থাকা আনন্দময় ও মধুময় করে তুলতে হলে স্বাস্থ্য সচেতন খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। আমাদের দেশে এই ধরনের রান্নার বইয়ের ব্যাপক অভাব। দীর্ঘদিন ধরে রান্নার চর্চা করতে গিয়ে এর অভাব অনুভব করছিলাম। ডায়েবেটিস রুগী, হার্টের রুগী বা অতিরিক্ত মেদবহুল ব্যক্তিদের জন্য এই ধরনের রান্না প্রয়োজন? এই অভিজ্ঞতা থেকেই স্বাস্থ্য সচেতন রান্নার গ্রন্থের উদ্ভব। বইটি খাদ্যবিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিজ্ঞানীদের পরামর্শ নিয়েই রচিত। যে মা-বোনেরা পরম মমতা দিয়ে পরিবার পরিজনদের জন্য রান্না করে থাকেন তারা সবাই সুস্থ থাকবেন, নীরোগ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।বইটি যদি পাঠকদের সামান্য উপকারে আসে তবে আমার শ্রম সার্থক বলে মনে করব। ঘরে ঘরে রাঁধুনীরা সচেতন হয়ে উঠুন, স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন, দীর্ঘদিন জীবন ধারণ করুন-সকলের জন্য রইলো এই শুভ কামনা। কেকা ফেরদৌসী ফেব্রুয়ারি ২০১০
কেকা ফেরদৌসীর জন্ম ৪ আগস্ট ১৯৬০ সালে, ঢাকায়। বাবা মরহুম ফজলুল হক ছিলেন চলচ্চিত্র সংবাদিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক। মা কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। স্বামী ইমপ্রেস গ্রুপের পরিচালক ও শিল্পপতি আব্দুল মুকিত মজুমদার (বাবু)। দুই সন্তান সোনালী ও আকাশ। কেকা ফেরদৌসী ১৯৮০ সালে বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার সময় বিদেশী রান্নার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন ও বাংলাদেশী রান্না বিদেশীদের কাছে পরিচিত করেন। ১৯৮৪ সালে দেশে ফিরে দেশী ও বিদেশী রান্না নিয়ে তার আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু হয় । বর্তমানে তিনি “কেকা ফেরদৌসীর রান্নাঘর’ নামে একটি রান্নার স্কুল পরিচালনা করছেন, সেই সাথে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন প্রাইভেট চ্যানেলে রান্নার অনুষ্ঠান করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কেকা ফেরদৌসীর রান্না বিষয়ে বিভিন্ন লেখা নিয়মিত প্ৰকাশিত হচ্ছে। তিনি দেশে ও বিদেশে ভ্ৰমণ করতে পছন্দ করেন এবং প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন রান্না শেখার চেষ্টা করেন।