উপন্যাস জীবনের কথা বলে, বলে সমাজের কথা। ঘটনা পরম্পরায় জীবনের সামগ্রিকতা তুলে ধরতে একের পর এক ঘটনা প্রবাহে এগিয়ে চলে উপন্যাসের বহমানতা! ঘটমান সংকট আবহে চলমান জীবনের পথ পরিক্রমা দৃশ্যমান হয় উপন্যাসে। সামাজিক কুসংস্কার, বৈষম্য কিংবা ঘুনেধরা সমাজে কুঠারাঘাত করে পারিবারিক, সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক বিপ্লব বা সংস্কার সাধনে উপন্যাসের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত কিংবা আশা-ভরসা কেন্দ্রিক জীবনালেখ্য উপন্যাসের উপজীব্য। সায়াহ্নে সুপ্রভাত উপন্যাসটিতেও আবহমান বাংলার উপন্যাস চরিত্র ফুটে উঠেছে। কেন্দ্রীয় চরিত্রের হাসান-রাবেয়া দম্পতির জীবনালেখ্য নিয়েই রচিত হয়েছে উপন্যাসটি। এই দম্পতির সহজ সরল জীবন বোধ ও তাদের যাপিত জীবনের ঘটনাবহুল বর্ণনায় উঠে এসেছে পারিপার্শ্বিকতা, সমাজ ও সামাজিকতা, ধর্মীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন আঁধারভেদী সরল পথের নির্মোহ সত্য। এ উপন্যাসটিতে যেমন এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন ও শহুরে জীবন, আবার তেমনি চিত্রিত হয়েছে গ্রামীণ জীবনের সরলতা। এতে যেমন আলোকপাত করা হয়েছে ধর্মের প্রকৃত সত্য হতে বিচ্যুতি, আবার তেমনি উপস্থাপিত হয়েছে দলিল ভিত্তিক যৌক্তিক চিন্তা দর্শন। ঘটনা পরম্পরায় বর্ণিত হয়েছে দ্বীন ইসলামের আলোকে জীবনের সঠিক দিক নির্দেশনা। জীবন বৈচিত্র্যময়, কুসুম কাননে পথ চলাতেই জীবন সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত আর সংকট পেরিয়ে নিরন্তর চেষ্টায় সাধিত হয় জীবনের সফলতা। জীবনের পথ চলাতে যেমন রয়েছে বিপদ-আপদ কিংবা সংকট, আবার তেমনি রয়েছে বিধাতার অপার মহিমায় অবগাহনের প্রশান্তি। তবে সংকট উৎরিয়ে ঝলমলে আলোর পথের যাত্রী হতে প্রয়োজন সীমাহীন ধৈর্য। এ উপন্যাসের হাসান-রাবেয়া দম্পতি চরিত্রে এর প্রতিফলন ঘটেছে সুস্পষ্টভাবে। কেন্দ্রীয় চরিত্র হাসান ও রাবেয়াসহ আনুসঙ্গিক চরিত্র মিলে ফুটে উঠেছে সামাজিকতা, ধর্ম ও সামগ্রিক জীবনবোধ। আলঙ্কারিক শব্দ বিন্যাসে একের পর ঘটনা প্রবাহ নদীর স্রোতের মতোই গতি এনেছে এ উপন্যাসের শুরু হতে শেষ অবধি! গতিশীল ভাষার ব্যবহার এ উপন্যাসটিকে করেছে অত্যন্ত সাহিত্যমান সম্পন্ন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদ মুহাম্মাদ নাসির রচিত এ উপন্যাস পাঠক মহলে সাদরে গৃহীত হবে বলে আমার: দৃঢ়: বিশ্বাস।