গল্পকার হাজেরা খাতুনের প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘কুঁচকড়ি (২০২১)। এ গ্রন্থের চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে মানবজীবনে নিয়ত প্রবহমান হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনা, আশা-হতাশার জীবন্ত আলেখ্য। মানবজীবনের এ প্রপঞ্চগুলোর অভিঘাতে নির্মিত হাজেরা খাতুনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কাঠগোলাপ (২০২৩)’।
এ কাব্যের কবিতাগুলোতে সমাজের অন্ত্যজ শ্রেণির জীবনসংস্কৃতি, পুরাতন ঐতিহ্যের প্রতি অগাধ ভালোবাসা, প্রকৃতির প্রতি অপরিসীম আকর্ষণ পাঠকচিত্তকে অবলীলায় নিয়ে যায় মুগ্ধতার মায়াবী জগতে। স্বপ্ন দেখা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।স্বপ্ন মানুষকে হাসায়,কাঁদায়,হর্ষোৎফুল্ল করে,বিষণ্ন করে আবেগী করে,ভালোবাসে,ভালোবাসায়। মানব প্রবৃত্তির এই বাস্তবচিত্র প্রতিফলিত হয়েছে ‘স্বপ্ন আমার স্বচ্ছ জলে’ কবিতায়।
কবির সতেজ কণ্ঠের উচ্চারণ: ‘হতে পারি আমি নিতান্তই পাড়া গেঁয়ো। স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি; স্বপ্ন আমার আকাশ ছোঁয়া।’ মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়ো।আর এ স্বপ্নের বুনন ‘কাঠগোলাপ’ কাব্যকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করে তুলেছে। স্বপ্নে চলার পথ মসৃন নয় ‘কাঠগোলাপ’ কবিতায় স্বপ্ন পূরণে কবি বার বার হোঁচট খেয়েছেন আবারও নতুন উদ্যমে ভিন্ন ধারায় স্বপ্ন দেখেছেন। স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত করতে প্রতিক্ষার প্রহর গুনেছেন । তুচ্ছ উপাদানকে মহৎ কাব্যে রূপদান,স্বতন্ত্র কাব্যভাবনা, দিগন্ত বিস্তৃত কবিকল্পনা, অভিনব বিষয়চিন্তা ‘কাঠগোলাপ’ কাব্যের আত্মায় প্রাণ সঞ্চার করেছে।
কবিতার শরীরে লেপে দিয়েছেন প্রেম-ভালোবাসার অনুপম সৌকর্য-সেখানেই কবির স্বপ্ন উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। এ কাব্যের প্রতিটি কবিতা যেন পাঠকের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় নিমগ্ন। আশা করি ‘কাঠগোলাপ’-এর সৌরভে সুরভিত হবে পাঠকহৃদয়। কবির জন্য শুভকামনা নিরন্তর। কবিতার জয় হোক।