অবাসযোগ্য এই পৃথিবীর বেড়ে চলা ‘ক্ষুধা আর ক্ষুরধার নীতির সংকট’ যা ভোগায় গুলিবিদ্ধ পাখির যন্ত্রণাকাতর কন্ঠের মতো। চঞ্চল করে তোলে, যখন হঠাৎ বাতাসের এক হলুদ গনগনে আভায় উচ্ছ্বল সবুজ ঘাসফড়িং’রা হয়ে পড়ে নীল নিথর। কিন্তু এ পৃথিবী তো হতে পারত নিরাপদ, হতে পারত অন্নপূর্ণার আলো। ধরিত্রীর প্রতিটি শস্যকণা একইভাবে প্রবেশ করতে পারত প্রতিটি উদরে। এ পৃথিবী হতে পারত প্রেমের, হতে পারত তীব্র চুম্বনের, নারীর ভেজা চুলে হেলে পড়া নরম দুপুরের, হতে পারত নগ্ন পায়ের সাদা জুতোর। এ পৃথিবী হতে পারত তাদের, যারা বিশুদ্ধ ভালোবেসে তোমাকে জিতিয়ে দিয়ে হয়েছে ‘হারিয়ে যাওয়া শেরপা। আমাদের কী ঠিক অতটা জেতবার দরকার আছে? প্রাণপণ ছুটে সবাইকে মাড়িয়ে বাতাসের ঠিক অতটা উচ্চতায় যাবার? যেখানে গেলে ফুরিয়ে যায় অক্সিজেন আর ফুরিয়ে যাই আমরা নিজেই। বরং আমরা পৌঁছাতে পারি সেখানে, পৃথিবীর আদিমতম দিন থেকে যেখানে আমাদের এক হবার হাহাকার। হাহাকার এক অমীমাংসিত মেঘ থেকে বৃষ্টি নামানোর, হাহাকার ছুটি হয়ে যাওয়া একলা হোস্টেলের ধূসর নিভৃত সন্ধ্যের। সেই এলোমেলো ভাবনার—গোপন কান্নার, সাদা-কালো অক্ষরে পুষে রাখা ক্ষতের জলছাপ এই কাব্যগ্রন্থ।
জান্নাতুন নাহার তন্দ্রা, পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিষয় - তড়িৎ ও কম্পিউটার প্রকৌশল। বর্তমানে প্রভাষক হিসেবে নিযুক্ত আছেন নিউ জার্সির রোয়ান ইউনিভার্সিটিতে। জন্ম ১০ মার্চ ১৯৮৭ চুয়াডাঙ্গাতে, সেখানেই স্কুল জীবন ও বেড়ে ওঠা। পরবর্তী শিক্ষা জীবন- হলিক্রস কলেজ ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। কর্মজীবন শুরু হয় প্রকৌশলী হিসেবে নেটওয়ার্কিং কোম্পানিতে যোগদান ও পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে। এরপর মাস্টার্সের জন্য আগমন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটায়। পিএইচডি করেছেন নর্থ ক্যারোলিনা এ এন্ড টি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে। লেখিকা বিচ্ছিন্নভাবে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ২০১৫ সালে প্রথম প্রকাশিত বই ‘প্রবাসে’ যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যয়নকালীন সময় নিয়ে লেখা। ২০২৩ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস -এখানে অরুণোদয়।