"হোমওয়ার্ক করো নি কেন?" "মনে নেই।" "আবার বলো।" "মনে নেই।" শাহরিয়ার কিছু বলল না।কেবল বেত হাতে নিয়ে লাস্ট ডেস্কের দিকে এগিয়ে গেল। আদেশ দেওয়ার পূর্বেই তার দিকে হাত এগিয়ে দিলো আবৃতি। ততক্ষণ অবধি হাত সরিয়ে নিলো না যতক্ষন না শাহরিয়ার নিজ থেকে থামলো।মেয়ের এমন জেদ দেখে শাহরিয়ার নিজেও ক্রোধ দমন করতে পারলো না।ফলস্বরূপ সে নিজেও থামতে চাইছিল না। সে চাইছিল আবৃতি বাকীদের মতো হাত সরিয়ে নিক অপর দিকে আবৃতি নিজেও জেদের দুই কাঠি উপরে অবস্থান করছিল।শাহরিয়ার যখন বেত নিয়ে ফিরছিল তখন ক্লাসের বাকী সবার নজর তির তির করে কাঁপতে থাকা আঘাত প্রাপ্ত হাতের দিকে। ডান হাতটা কেবল রক্তিম বর্ণ ধারণ করেনি অনেকটা ফুলেও গেছে।শাহরিয়ার সামনে চলে আসার পরেও আবৃতি দাঁড়িয়েই আছে।হাতটাও আগের অবস্থানেই আছে। "দাঁড়িয়ে আছো কেন স্টুপিড মেয়ে?বোসো।" আবৃতি আস্তে-ধীরে হাতটা সরিয়ে ডেস্কের উপর রেখে বসলো।হোয়াইট বোর্ডের অংক তোলার আদেশ পড়লে ধীরে ধীরে খাতায় অংক তুলছিল মেয়েটা।শাহরিয়ারের আজকের এই ভয়ংকর রূপ দেখে পুরো ক্লাস চুপটি মেরে রইল।তারা তাকে মিষ্টভাষী এবং হাসি মুখে দেখে অভ্যস্ত। আবৃতির সামনের ডেস্কে বসা ত্বোহা পিছন ফিরে তাকে ফিসফিস করে বলল, "হাতে পানি দিবি?চল ওয়াশরুমে যাই?" "প্রয়োজন নেই।তুই সামনে তাকা।না হলে তোর ভাগ্যেও মার জুটবে।" "এই হাতে আর অংক তুলিস না।দে আমি তুলে দিচ্ছি।" টাপুর টুপুর পানি ঝরছে আবৃতির দুই চোখ থেকে। যন্ত্রণায় মুখ পানসে হয়ে আছে।তবুও সে থামলো না। দুই আংগুলের মাথায় কলমটা আলগোছে রেখে লেখা চালিয়ে গেল। ছুটির ঘন্টা পড়েছে। বোর্ডে যখন শাহরিয়ারের হাত থামলো তখনও আবৃতি লিখছিল। তাকে এক পলক দেখে রুম ত্যাগ করলো শাহরিয়ার। ধীরে লেখার কারণে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল।মেয়েটা। ফলস্বরূপ লেখা শেষ হতে সময় পার হলো বাড়তি ত্রিশ মিনিট। ক্লাসরুমগুলো ততক্ষণে ফাকা হয়েছে,অধিকাংশ স্যার ম্যাম বেরিয়ে গেছেন।আবৃতি ডেস্কের ড্রয়ারে কিছু জিনিসপত্র রেখে অসাবধানতায় ব্যাগ হাতে নিলো।আরো একটা বার যন্ত্রণায় শ্বাস ভারী হয়ে উঠলো তার।
সাদিয়া খান সুবাসিনী। ডাকনাম মুন। সুবাসিনী নামে পাঠক মহলে পরিচিত এক সাধারণ মানুষ। বাবা মায়ের তিন সন্তানের মাঝে প্রথম সন্তান।কোনো এক ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রভাতে জন্ম প্রিয় শহর টাংগাইলে।