ইসলামে স্বধর্মত্যাগ: একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় বিশ্লেষণ' শীর্ষক গ্রন্থটির মূল রচয়িতা বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ড. তাহা জাবির আলআলওয়ানি। আরবিতে লেখা মূল গ্রন্থ থেকে Apostasy in Islam: A Historical and Scriptural Analysis নামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ন্যান্সি রবার্টস । স্বধর্মত্যাগের (আল-রিদ্দাহ) জন্য নির্ধারিত আইনানুগ শাস্তি কী? কুরআনের ২:২৫৬ আয়াতে বর্ণিত ‘দীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই' অনুযায়ী তার প্রতি ধর্ম কতটুকু সহনশীলতা দাবি করে?— এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে লেখক গভীর অধ্যয়ন ও গবেষণা শুরু করেন, যার ফসল এ গ্রন্থ । গ্রন্থটির আলোচ্য বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। লেখক ইসলাম (বিশ্বাস) থেকে বের হয়ে যাওয়ার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করেন না। তিনি এ গ্রন্থে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষের প্রবক্তাদের বিরোধপূর্ণ যুক্তিতর্ক পেশ করার পাশাপাশি কুরআন ও সুন্নাহতে উল্লেখিত সমুন্নত বিশ্বাসের স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেছেন। যতদিন একজন স্বধর্ম (ইসলাম) ত্যাগকারী বিচারযোগ্য অন্য কোনো অপরাধের সাথে জড়িত না হবেন, লেখকের মতে ততদিন বিষয়টি শুধু আল্লাহ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। কুরআন একজন অবিশ্বাসীকে বিশ্বাস ত্যাগের পর বারবার ফিরে আসার সুযোগের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে, তাদের হত্যা করা উচিত কিংবা শাস্তি দিতে হবে এমন কথা বলেনি- লেখক এ সত্যের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। কুরআনের নির্দেশানুসারে ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া কারো জীবন নেওয়া সমস্ত মানবজাতিকে হত্যা করার শামিল। সুতরাং, ভালোবাসা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থের সাথে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিশ্বাসের স্বাধীনতা । গ্রন্থটিতে এ বিষয়টিই স্বচ্ছভাবে সবার উদ্দেশে তুলে ধরা হয়েছে।
Title
ইসলামে স্বধর্মত্যাগ : একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় বিশ্লেষণ
ত্বাহা জাবির আল আলওয়ানী ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে/১৩৫৪ হিজরিতে ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীয়া ও আইন কলেজ থেকে ১৯৫৯ খ্রি./১৩৭৮ হিজরিতে অনার্স এবং ১৯৬৮ খ্রি:/১৩৮৮ হিজরিতে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ খ্রি./১৩৯২ হিজরিতে উসূল-ই-ফিকহ এর উপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ১৯৭৫ খ্রি./১৩৯৫ হি. থেকে ১৯৮৫ খ্রি./১৪০৫ হি. পর্যন্ত সৌদী আরবের ইমাম মুহাম্মদ ইবন সউদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিকহ ও উসূল-ই-ফিকহ্ এর প্রফেসর ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৮৭ খ্রি./১৪০৭ হি. OIC'র ইসলামিক ফিকহ একাডেমীর সদস্য ছিলেন। ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্স সংক্রান্ত তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী হলো- ইমাম ফখরুদ্দীন রাজীর আল মাহসুর ফি ইল্ম উসূল আল ফিকহ্ [উসূল-ই-ফিক সংক্ষিপ্ত সার] এর ব্যাখ্যা সংক্রান্ত ৬ খণ্ডের বই, আল ইজতিহাদ ওয়া আল তাকলীদ ফি আল ইসলাম। [ইসলামে আইনগত যুক্তি ও অনুকরণ], হুকুক আল মুত্তাহাম ফি আল ইসলাম [ইসলামে অভিযুক্তের অধিকার], আদব আল ইখতিরাফ ফি আল ইসলাম [ইসলামের মত পার্থকের নীতি] এবং উসূল আর ফিকহ্ আর ইসলামি [ইসলামি আইনশাস্ত্রের উৎস পদ্ধতি], এছাড়াও তিনি বহু গ্রন্থ ও অগণিত প্রবন্ধ লিখেছেন-যা জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।