তেরোটি গল্প নিয়ে সাজানো পৃথিবীর সব সুর থেমে গেলে পর গ্রন্থটি লেখকের প্রকাশিত প্রথম বই। পরাবাস্তব ও সায়েন্স ফিকশন বা সাই-ফাই ফ্যান্টাসি জনরার এই গল্পগুলো একটু অদ্ভুত কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে খানিকটা উদ্ভট। যেখানে অটোগ্রাফ দেখেই যেমন অনাগত বিপদ আঁচ করতে পারে হামিদ, তেমনি অতিরিক্ত দেখে বিপত্তি বাঁধায় নামহীন এক বালক! অতি সাধারণ পাগলেরাও এই গল্পের জগতে মহা গুরুত্বপূর্ণ। স্মৃতিশূন্য মস্তিষ্ক নিয়ে ভোরে জেগে ওঠা আর রাতের অন্ধকারে স্মৃতি ফিরে পাওয়া ব্যাক্তির গল্পের পাশাপাশি আছে রিকিতা নামের এক মেয়ের গল্প; যার স্মৃতিতে অনুপ্রবেশ করে কিছু বলতে চায় অপরিচিত এক বৃদ্ধ! গ্রামের সবচেয়ে সুখী মানুষ জামিল মিয়া কোনো কারণ ছাড়াই আত্মহত্যা করে যেমন সবাইকে ধন্দে ফেলে দেয়। তেমনি আবার সমান্তরাল দুটি জীবনের গল্প বলে চমকে দেয় পেশাদার খুনি। কালো ও ধুসর স্যুট পরা দুই আগন্তুককে দেখা যায় ঢাকার রাস্তায়, নিরীহ একটি খেলার প্রস্তাব নিয়ে। একই শহরে বর্ষাস্নাত সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে বসে হিটলারের পুনরাগমনের গল্প শোনায় অন্য কেউ। চৈতী ও আশরাফের ভালোবাসার গল্প সময়ের বৃত্তে ঘূর্ণিপাক খেতে খেতে থমকে দাঁড়ায় লোকে লোকারণ্য এক প্ল্যাটফর্মে। সেই সময়ের বৃত্তেই আলোড়ন তুলে নতুন এক ভালোবাসার চক্রে জড়িয়ে পড়ে হাবিব ও অনুরিক্তা। ফারাতিনের হাত ধরে আরেকটি ভালোবাসার গল্পের সম্ভাবনা তৈরি হলেও, শেষমেশ জন্ম নেয় প্রজেক্ট অ-নর; যেন ভিন্ন কোনো পৃথিবীর গল্প! সব মিলিয়ে বেশ গোলমেলে অবস্থা। তাতে আরও জট পাকাতেই যেন নেয়ামত শেখের পুঁথি শেষ হওয়ার সাথে সাথে থেমে যায় পৃথিবীর সব সুর! বাস্তবতার কঠোর নিয়মে আবদ্ধ থেকে যারা হাঁপিয়ে উঠেছেন, অদ্ভুত এই গল্পের জগতে তাদের নিমন্ত্রণ রইল!