একটি পরিবারের দায়শীল অথচ মায়াবী, স্বাধীন কিন্তু সক্রিয়, আটপৌরে তথাপি অসাধারণ একটি স্বচ্ছন্দ কাহিনিকে ঘিরে ‘চৌকাঠ’ উপন্যাসটি আবর্তিত হয়েছে। পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ কিন্তু তাদের পরিণতি না জেনেই জীবনযাপন করে। খায়দায়, ঘুমোয়, ঘুরে বেড়ায়, সম্পর্ক গড়ে কিন্তু সভ্যতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয় খুব কমজনই। একটি পরিবারের কর্তা বা অভিভাবক বা ভালোবাসা, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা বা গড়ে ওঠার শেষ আশ্রয়টুকু কিন্তু বাবা-মা বা পিতামাতা। পিতামাতার এতটুকু অবহেলা, অনাদর, অযত্ন, অনুপস্থিতি বা হেঁয়ালিপনা সন্তানকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আবার সেই ধ্বংসস্তূপ থেকেই সন্তান নিয়তির অনুকূল পরিবেশে, নিপুণ দক্ষতায় ও কর্মকুশলতায় নিজ নিজ স্বর্গোদ্যান গড়ে নিতে পারে, যদি আল্লাহ চান, যদি তাঁর তাওফিক সুমর্জি হয়। ‘চৌকাঠ’ উপন্যাসে লেখক মোর্শেদা হোসেন রুবি এমনই এক উপরিউক্ত আশ্চর্য দার্শনিকীর প্রতিস্থাপন দিয়েছেন একটি পরিবারের ছায়াময় আবরণে। যেখানে তেহজিব এক এতিম কিন্তু দুর্দান্ত ভাগ্যময়ী নারী। ইয়াশা বড় লোকের এক জেদি, দেমাগি কিন্তু সচ্চরিত্রের ছেলে কিন্তু পরিবার বা সমাজে একসময় সে বখে যাওয়া পুরুষ এবং তার পিতাও কিন্তু মহান আল্লাহর অসীম রহমতে ও তাদের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তারা আবার একটি সুন্দর ও অনাবিল পারিবারিক জীবন ফিরে পায়... কিন্তু কীভাবে? প্রিয় পাঠক, এর সবিস্তার জানার জন্যই আপনাকে ‘চৌকাঠ’ উপন্যাসটি আগাগোড়া পড়তে হবে একান্তে ও নিবিড় সন্নিবেশে।
জন্ম, বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়া সবটাই পুরোনো ঢাকার পরিমন্ডলে। একই সাথে দুই বিপরীতমুখী বিষয় (আইন ও বাংলা সাহিত্য) নিয়ে পড়াশোনা করলেও সাহিত্যের প্রতি অন্তরের টান গোড়া থেকেই। বই পড়ার প্রচণ্ড নেশার পাশাপাশি লেখালেখির ঝোঁকও সেই ছোটবেলা থেকেই। একসময় লুকিয়ে লিখলেও পড়াশোনার পাট চুকিয়ে সংসারের শত ব্যস্ততার মাঝে লেখালেখিই ধ্যান-জ্ঞান, ভালোলাগা আর বিনোদন। শব্দের খেলা খেলতে পছন্দ করেন বলেই শব্দজালের কুহক রচনা করতে ভালবাসেন। একটা সময় এটি ছিল কেবল মনের খোরাক। এখন লেখেন সব ধরণের পাঠকের জন্য। একটা নিগূঢ় দায়িত্ববোধ থেকেই লেখেন। প্রতিটা গদ্যে সূক্ষ্ম বার্তা রেখে দেন পাঠকদের জন্য। পাঠক তা বুঝতে পারলেই লেখকের প্রশান্তি। লিখে যেতে চান আমৃত্যু। প্রতিটা লেখায় ফোটাতে চান প্রশান্তির ফুল।