প্রত্যেকের জীবনে একটা আর্থিক গল্প আছে। অধিকাংশের গল্প অসুন্দর। পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায় সবাই বেশি বেশি ভুল করেছেন। অনেকেই মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকেছেন, অনেকে ঠকেছেন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে, নন-প্রফেশানাল সাহায্য নিয়ে। আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জ্ঞান খুব প্রয়োজনীয় কিন্তু এই জ্ঞান স্কুল, কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে শেখানো হয় না। এই জ্ঞান তাই খুব যত্ন করে শিখতে হয়, নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে হয় তবেই ভালো ফল পাওয়া যায়। আপনি সারা জীবনে যে টাকা আয় করেন শুধু সেই টাকার সঠিক ব্যবস্থাপনা করে আপনি জীবনে সচ্ছলতা আনতে পারেন, অয়েলদি হয়ে উঠতে পারেন। এই বই আপনাকে শিখাবে আপনি কীভাবে সামনে যাবেন, টাকা পয়সা নিয়ে কী করবেন এবং কী করবেন না। আপনি যদি বইয়ের প্রত্যেকটা চ্যাপটার মনোযোগ দিয়ে পড়েন এবং অর্জিত জ্ঞান জীবনে কাজে লাগান, তাহলে দেখবেন আপনার আর্থিক জীবন দ্রুত উন্নত হচ্ছে। মনে হবে এই বই কেন আরও আগে আপনার চোখে পড়লো না! ------- বিশ্বাস করুন, আপনার আর্থিক জীবন আমূল পাল্টে যাবে এখন থেকে------- সাইফুল হোসেনের এই বইয়ের প্রতিটি পাতা আপনাকে চিন্তার নতুন নতুন দিগন্তে নিয়ে হাজির করবে। আপনি বইটি পড়তে পড়তে নিজের জীবনের আর্থিক গল্পের সাথে পরিভ্রমণ করবেন অতি সহজে। বইটি পড়ে কখনো আশান্বিত হবেন, কখনো অতীতের ভুলের জন্য দুঃখবোধ করবেন কিন্তু পরিশেষে আশায় বুক বাঁধবেন এই ভেবে যে আপনি পারবেন, আপনার আর্থিক জীবন আবার সুন্দর হবে, আপনি স্বচ্ছল হবেন, আপনার রিটায়ারমেন্ট সাবলীল হবে। -------আপনি শুরু করুন যেখানে যে অবস্থায় আছেন সেখান থেকে, আপনি অবশ্যই পারবেন------ সবাই আপনার শরীরের যত্ন নিতে পারে না, প্রকৃতপক্ষে আপনাকেই নিতে হয়, সবাই আপনার অর্জিত অর্থের যত্ন নিতে পারে না, আপনাকেই নিতে হয়। এজন্য নিজে শিখতে হয়, জানতে হয়, বুঝতে হয়। এই বই নানাবিধ বিষয়ের আলোচনায় আপনাকে বুঝিয়ে দিবে আপনি কখন কীভাবে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ করবেন, অপ্রয়োজনীয় খরচের হাত থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাবেন, কীভাবে বাজেট করবেন, কীভাবে সঠিক আর্থিক প্ল্যান করবেন, ইন্সুরেন্স করবেন কিনা এবং কীভাবে সুন্দর অবসর জীবন কাটাবেন। আপনি জেনে যাবেন কোনো আর্থিক সিদ্ধান্ত আপনাকে পিছিয়ে দিবে, কাকে আপনি টাকা দিবেন আর কার ধারে কাছেও যাবেন না, কার সাথে আপনি ব্যবসা করবেন আর কার থেকে হাজার মাইল দূরে থাকবেন। সর্বোপরি আপনি জানতে পারবেন নিজের আর্থিক সমৃদ্ধি কীভাবে আসবে আর কীভাবে আপনি আর্থিকভাবে স্বাধীন হবেন।
সাইফুল হোসেন পেশায় একজন ব্যাংকার, বিজনেস কনসালটেন্ট, লেখক এবং স্পিকার। পারসোনাল ফাইন্যান্স তাঁর খুব প্রিয় গবেষণার বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে বাঙ্গালীরা যতটা না সঞ্চয়মুখি তার চেয়ে বেশী খরুচে স্বভাবের। তাঁরা যদি তাঁদের আয়ের একটা বড় অংশ সঞ্চয় করত তাহলে বিদেশী ঋণ বা বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ত না। আমাদের অর্থনীতি অনেক বেশী বিনিয়োগ করতে পারত নিজের সঞ্চয় থেকে। পশ্চিমা বিশ্ব চরম ভোগবাদীতার কারণে তাঁদের সঞ্চয় প্রবণতা কমে তলানিতে ঠেকেছে, তাঁরা ঋণ করে ভোগ করে। এই প্রবণতা একটি দেশকে ঋণ-করে-ঘী-খাওয়া অর্থনীতিতে পরিণত করে। আমাদের দেশেও এই প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। ঋণ, বিশেষ করে ভোগের জন্য, সহজ করা হচ্ছে। ফলে সঞ্চয় বিমুখিতা এবং ঋণ-মুখিতার প্রবণতা চালু হচ্ছে সমাজে। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের যারা যুবসমাজ তারা উদ্যোক্তা হবার দৌড়ে পিছিয়ে যাবে। তারা শুধু চাকরী খুঁজছে। লেখকের উদ্দেশ্য তরুণদেরকে চাকরী করার পরিবর্তে উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী করে তোলা। কারণ তারা পারবে বর্তমানের প্রযুক্তি নির্ভর দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে, দেশে চাকরীর ক্ষেত্র তৈরি করতে। এই বই সেই উদ্যোক্তা হবার পথে তরুণদের উৎসাহ দেয়ার জন্য লেখা। লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্সসহ এমএসএস করেছেন প্রথম শ্রেণিসহ, পড়েছেন ব্রিটেনের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতি ও ব্যাংকিং নিয়ে লিখছেন বিভিন্ন ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকায় দুই দশকের বেশী সময় ধরে। তাঁর প্রবন্ধ সংকলন নিয়ে বের হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ব্যাংকিং নামক একটি বই। তাঁর লেখা সাবলীল, প্রাঞ্জল ও সুপাঠ্য যা পাঠককে গভীরভাবে টানে। এ যাবত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিনটি। তিনি প্রবন্ধ নিবন্ধ লেখার পাশাপাশি সাবলীলভাবে লেখেন গল্প, উপন্যাস, নাটক, গান, ছড়া। তাঁর জন্ম সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায়।