বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বৈপ্লবিক বিকাশের সাথে সাথে মানুষের সামাজিকতা ও সংস্কৃতির বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে এমন ধারণার সত্যতা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে গেছে । অনেক ক্ষেত্রে সামাজিকতার মান নিম্নমুখী হয়েছে এবং সাংস্কৃতিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে । টেলিভিশনের যুগ পেরিয়ে স্মার্টফোনের মতো অত্যাধুনিক যোগাযোগ-প্রযুক্তি সেই প্রভাবের বহুমাত্রিকতা স্পষ্ট করেছে । আধুনিকতার বড় স্লোগান ‘ব্যক্তি স্বাধীনতা' আর ‘ব্যক্তির ইচ্ছা’-কে ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করতে স্মার্টফোন অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয় । সেই সক্ষমতার কারণে স্মার্টফোন হয়ে উঠেছে মোহনীয় এক যন্ত্র; যে যন্ত্র বহুমুখী যোগাযোগ সাধন আর বহুমাত্রিক বিনোদন উপভোগকে সহজসাধ্য করেছে । এমনই পরিস্থিতিতে স্মার্টফোন আসক্তির বিষয়ে উপনীত হয়েছে; যে আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব থেকে কেউ যেন মুক্ত নয় । সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে শিশু ও শিক্ষার্থীরা । আসক্তির প্রভাবে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের পথ পরিক্রমা জটিলতার মুখোমুখি । তাদের ব্যবহারিক জীবনে ছন্দপতন হয়েছে; লেখাপড়ায় মনঃসংযোগ করতে পারছে না; সামাজিক জীবনের স্বাভাবিক সামাজিকতা বিনষ্ট হচ্ছে; এমনকি মানবীয় মূল্যবোধবিরোধী সংস্কৃতি বিস্তার লাভ করেছে । ‘স্মার্টফোন আসক্তি ও সমাজ সংস্কৃতি' নামের এই বইয়ে এ সকল বিষয়ের বিশ্লেষণ নিয়ে আসা হয়েছে । কেমন করে মানুষ স্মার্টফোনে আসক্ত হয়, কীভাবে বুঝবেন আপনি স্মার্টফোনে কতটুকু আসক্ত, স্মার্টফোনে আসক্তির পরিণতি কী আর কীভাবে এই আসক্তি থেকে উত্তরণ সম্ভব—আলোচ্য গ্রন্থটিতে এই সকল প্রশ্নের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে ।