এই মেয়ে কাঁদছো কেন? আমি এসেছি সেটাতে তো তোমার খুশি হবার কথা, বোকা মেয়ে, শুধু শুধু কাঁদছো কেন? চোখ মোছো তিথি, শাওন আমি হেরে গেছি, আমি একেবারে হেরে গেছি, আমার সব শেষ শাওন, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী মেয়ে, আরে কি বলে এসব, তুমি হেরে যাবে কেন? তোমার সব শেষ হবে কেন? তোমার না মেঘ আছে, মেঘ না তোমার পৃথিবী, তুমি তো হেরে যাওনি, মেঘকে তুমি জন্ম দিয়েছো ঈশ্বরের প্রিয় বাচ্চাকে তুমি পৃথিবীতে এনেছো তুমি তো জয়ী, নিজেকে এভাবে কেন দেখছো, কেন মনে করো না যে এই চঞ্চল পৃথিবীতে সুখকে ধরার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে, তারপর একসময় সুখ পাওয়ার জন্য চাতক পাখির মতোন চেয়ে থাকা মানুষগুলো কি সুখের দেখা পায়? এই যে তুমি শুক্রবারে নিশ্চিন্তে শান্তির একটা ঘুম দিচ্ছ বেলাএগারোটা পর্যন্ত এই ঘুমের মাঝেও যে সুখ লুকিয়ে আছে সেটা বোঝ না তুমি। এই সুখ কেনার জন্য কত মানুষ কত কিছু করছে, তারা যে চীর নির্বোধ, তারা অজ্ঞ, তারা তো সুখের মানেই বোঝে না তিথি, তারা একমুঠো সুখ কিনতে নিয়ে মুঠোমুঠো দুঃখ নিয়ে ঘরে ফেরে, কারো জন্য কারো জীবন কখনোই থেমে থাকে না, এটা কেন বোঝ না তুমি, তুমি না স্ট্রং একটা মেয়ে তোমার মুখে এসব মানায় না তিথিÑ হাসো বেশি বেশি করো হাসো, হাসি দিয়ে দুঃখটাকে জয় করো, কষ্টটাকে পেছনে ফেলে দাও, হাসতে হাসতে সামনের দিকে এগিয়ে যাও, হাসতে তো কোনো টাকা-পয়সা লাগে না তিথি, জীবন কি যে আশ্চর্য রকমের সুন্দর সেটা তো তোমাকে বলতে হবে না নতুন করে, দেখো না আকাশ থেকে গলে গলে জোসনা ঝরে পড়ে সেটা দেখেই পদ্ম হাসে, আকাশের ফাঁকফোকর দিয়ে গলে গলে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ে সেটাতেই পৃথিবী হাসে, এটার চোয়ে সুখ আর কি হতে পারে, সুখ কে গড়ে নিতে হয় তিথি। শাওন তুমি এত সুন্দর করে কীভাবে বলতে পারো? আমি কেন এখন আর কিছুই বলতে পারি না? তুমিও বলতে পারো শুধু বলতে ভুলে গেছো, তোমাকে আবারও বলতে হবে, সুখকে খুঁজে নিতে হবে।
সুমী ইসলাম ১৯৮২ সালের ২৩ জুন কুষ্টিয়া শহরের সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন সাংস্কৃতিকমনা এবং তিনি তাঁর আইন পেশার পাশাপাশি প্রবন্ধ লিখেছেন, লিখেছে মঞ্চ নাটক, বাবার কাছে থেকেই তিনি পেয়েছেন লেখালেখির বিশেষ গুণ। কুষ্টিয়ার আলো-বাতাস-প্রকৃতির কাছে আজন্মকালের ঋণ, সেখানেই বেড়ে ওঠা এবং লেখাপড়া। কুষ্টিয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন তিনি। বর্ণাঢ্য চাকরি জীবনের ইতি টেনে আপাতত লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেছেন। একাধারে আবৃত্তি, জারিগান, একক অভিনয় ও লেখালেখিতে বিচরণ করেছেন এবং অদ্যবধি নিয়োজিত আছেন। 'ট্রেন থেমে আছে হৃদয়পুরে তাঁর প্রকাশিত দ্বিতীয় কবিতার বই।' 'গল্পগুলো সত্যি' তাঁর প্রকাশিত প্রথম ছোট গল্পের বই, এ ছাড়াও তাঁর কবিতা ও গল্প বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকাতে নিয়মিত প্রকাশ পেয়ে থাকে। তিনি কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস লিখে থাকেন, লিখে যাচ্ছেন।