কবিতা ব্যতিক্রম। যেখানে অন্যরকম গল্প হয়ে ওঠে। দিগন্ত থেকে আনাচ-কানাচ ছড়িয়ে পড়ে। এ মোহ এ ভালবাসা। 'আপাতত ভাঁট ফুলের গন্ধ আর কোকিলের ভেসে আসা/সুমধুর ধ্বনিতে পুলকিত।' এভাবে উপমা পাই, লক্ষ নিবদ্ধ করতে করতে ঘোরগ্রস্ত হয়ে পড়ি। কাব্যতুল্য হয়ে আসে অনেক দ্বিধা। এই মন মধ্যস্বত্ব অনুভব নিয়ে বেঁচে ওঠে। দোনা-মোনায় খুঁজে পায় প্রিয় আশ্রয়। এইতো প্রেম, এই মায়া। সব পড়ে থাক, তুচ্ছ হয়ে যাক। হয়তো 'শেষ হয়েও পড়ে থাক কিছু শোক'। এভাবেই মিশে যাই পরম্পরা ধরে কল্পনা ও বিশ্বাসে। পুষ্পিতা সেনের কবিতা পড়তে পড়তে এমনটাই ভাবছিলাম। কবি আত্ম-উপলদ্ধির চূড়ান্ত জায়গায় নিয়ে গেছেন। আপন সুতোয় বেঁধেছেন কবিতাগুলোকে। কবিতায় সম্পর্কের আবর্তন রেখে মগ্ন হয়েছেন। তিনি কবিতার জন্য আত্মসূত্রকে প্যাটার্ন করে নিয়েছেন। জীবন ও উপলব্ধির ঢেউ যেন প্রতি কবিতায়। 'চুপ' কবিতায় লিখেছেন: 'ব্যক্ততায় চাই না হোক স্তব্ধতা ভঙ্গ/চাপা দিয়ে রাখি মুখ।' কিংবা 'প্রেম' কবিতায় : 'ইশারারাও কিছু বলুক/দূর থেকেই নোনা হাওয়ায় যেন/ পাও কান্নার ঘ্রাণ।' আসলে আকুতিতে অন্তর্ঘাত সুর নেমে আসে। যেন মৌলিক এই মায়াবিস্তার রহস্য জালভেদ করে বুঝে পাওয়া প্রিয়জন। প্রিয় সাহসের কাছে কবিতা-ভাষা নিয়ে যায় আবশ্যিক মুদ্রা রূপে। এই পরিমাপ করেই কবিতা। পুষ্পিতা সেনের এমন কাব্যভ্রমণ উদাত্ত কালক্রমিক প্রতাপ। জীবনের সহজ কিছু অনুতাপ নেশাতুর হয়ে যায়। সেই থেকেই আঁচড়খানি বৃথা বইয়ের কবিতায় জীবন বিমূর্ত রূপে ধরা দেয়। যা সত্যিই মোহময়।