উপন্যাসটি আমাদের সমাজের প্রতিটি মানুষের জীবনেরই গল্প। জীবনপাঠে সবচেয়ে বেদনাদায়ক অধ্যায় পিতৃ-মাতৃহীন সন্তান হয়ে জন্ম নেয়া। উপন্যাসের তেমনি এক চরিত্র রিমি। যার বেদনাদায়ক অধ্যায়কে সুখপাঠ্য করে তোলে দাদী, ফুপি ও অন্য স্বজনরা। মা-বাবার স্নেহ-ছায়ার পরশ হয়ে আগলে রাখে দাদী। কিশোরী বয়সে মনের অজান্তে সম্পর্ক গড়ায় সৌরভের সাথে। পরিবারের সবাই রাজি না হলেও, দাদীর মধ্যস্থতায় তাদের সম্পর্ক বন্ধনে পরিণত হয়। এক সময় ভালো চাকরি হয়, কন্যা আসে ঘরে। তার ভেতরই নেমে আসে তাদের সংসারে বিশ্বাস আর ভরসার ঘাটতি, মান-অভিমান। ঠিক তখনি উপন্যাসের মোড় ঘুরে যায়। বাড়তে থাকে কাহিনির চিত্রপট। সৌরভের শহরে বন্ধুদের গ্রামে বেড়ানোর মাধ্যমে পুরো গ্রামব্যবস্থার বর্তমান অবস্থাকে তুলে ধরা হয়েছে। দোকানে, বাড়িতে, ধানের চাতালে ওয়াইফাই কানেকশন, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার মাধ্যমে অনেক অশিক্ষিত মানুষ কনটেন্ট তৈরি করে অর্থ আয়। সেসময়কার জনজীবন চলাচল, আবহমান বাংলা সংস্কৃতির সাথে বর্তমান সময়ের ঘটনা প্রবাহকে দাদীর গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন। প্রেম, বিরহ, গ্রামীণ জীবন, পারিবারিক বন্ধন, সামজিক জীবনব্যবস্থা, মিলন, বিচ্ছেদ, প্রেরণা, উপহাস, সব মিলিয়েই এই জীবনবিলাস!
ফরিদুল ইসলাম নির্জন জন্মান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। জন্মমাস অক্টোবর, জন্মদিন দশ, সন উনিশত সাত্তাশি। হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে শেষ করে, আইসিএমবি তে সিএমএ কোর্সে অধ্যয়নরত। ছোট বেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি তুমুল আগ্রহ। পড়তে পড়তে লেখার প্রতি ভালোবাসা জন্মে। সেই ভালোবাসা থেকেই নিয়মিত লিখতে থাকেন। দৈনিক পাতায় লেখা দেখার আনন্দ ছিল অন্যরকম। জাতীয় দৈনিকের পাশাপাশি দেশে-বিদেশে অনলাইনেও লিখছেন সরব। কখনো গল্প, কবিতা, ফিচার লিখে বেশ পরিচিত অর্জন করেছেন। রম্য গল্প লিখেও তিনি দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। দৈনিক সমকাল, দৈনিক কালের কণ্ঠ, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন,দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক ইত্তেফাক এর ফান পাতাতে তারকাদের ইন্টারভিউ নিয়ে বেশ পরিচিত অর্জন করেন। তিনি লেখার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়কে জাগিয়ে তোলেন। দৈনিক সমকালের পাঠক সংগঠন সমকাল সুহৃদ সমাবেশের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় ২০১০ সালে সমকাল থেকে প্রথম লেখক সম্মানী পান। দৈনিক সমকাল এর পাঠক সংগঠন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ বগুড়া জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় দেশের সেরা সংগঠন পুরস্কার-২০১১ তে পান। সমকাল সুহৃদ সমাবেশ থেকে দেশের সেরা সুহৃদ একাদশ (সৃজনে) ৫ম স্থান লাভ করেন। আত্মবিকাশ পাঠচক্র রচনা প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেন। বাংলা একাডেমিতে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ আয়োজিত 'তারুণ্যে রুখবে সহিংসতা' রচনা প্রতিযোগিতায় তয় স্থান লাভ করেন। বগুড়া সমকাল সুহৃদ সমাবেশ থেকে 'সুহৃদ বন্ধন ' সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে ছিলেন। তার আলোচিত উপন্যাস 'আশ্রয়' এর ভূমিকা লিখতে গিয়ে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘আশ্রয় উপন্যাসের পটভূমি নারীর বেঁচে থাকার দুস্তর পথের অভিযাত্রা। গ্রামীণ পটভূমিতে রচিত হয়েছে এই উপন্যাস। অনেক বিষয় নিয়ে নির্জনের উপন্যাস সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে।'