সংক্ষেপে যাঁদের কথা রয়েছে • বিজ্ঞান প্রকৃতির নানা রহস্যের কুয়াশা ছিন্ন করে। তবে এই কাজের পথ মসৃণ নয়, অভাবনীয় শ্রম ও সংঘাতে ভরা। এই শ্রম ও সংঘাতের বাধা পেরিয়ে পৃথিবীতে যাঁরা যুক্তি ও বিজ্ঞানের জগৎ গড়ে তুলেছেন তাঁদের নির্বাচিত কয়েকজনের জীবনকথার ডালি 'মানব সভ্যতায় বিজ্ঞানের কারিগর'। প্রথমে আসি আন্দ্রেয়াস ভেসালিয়াসের কথায়। বেলজিয়ামে জন্ম। অনেককাল আগে মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ নিষিদ্ধ কাজ বলে সমাজে বিবেচিত হতো। অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্ররা তা না হলে মানুষের যথাযথ শরীর সংস্থান শিখতেই পারতে না। আন্দ্রেয়াস অভিজাত বাড়ির ছেলে ছিলেন। বাড়ির অনেকেই চিকিৎসক। তিনি নিজেও চিকিৎসক। তবু তাঁকে একটা কঙ্কাল সংগ্রহ করতে গিয়ে জীবন বাজি রাখতে হতো। তার ওপর প্রসিদ্ধ গ্যালেনের ভাবনা সংশোধন করতে গিয়ে উপর্যুপরি আক্রমণের শিকার হয়েছেন তিনি। বিপন্ন আন্দ্রেয়াস পঞ্চম চার্লসকে চিঠি লিখেছিলেন, "আমার বয়স বেশি নয়, আমার কাজ অনেকে যে মানতে চাইবেন না, জানি। যাঁরা সত্যি সত্যি 'অ্যানাটমি' মানেন না, তাঁদের হাতে আক্রান্ত হলে আমায় আপনি আশ্রয় দেবেন।" ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত যখন প্রথম শবদেহ ব্যবচ্ছেদ করেন, তখন তাঁকেও প্রবল রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল। সময় আর স্থান আলাদা হতে পারে। সংঘাতের চিত্র একই। জ্যোতির্বিজ্ঞানের জগতে যোহান কেপলার একটি পরিচিত নাম। কেমন ছিল তাঁর শৈশব? বাবা দিনরাত পানীয়ের নেশায় ডুবে থাকতেন। মায়ের মানসিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল না। বাবা-মা থেকেও দেখার কেউ ছিল না। অবহেলা আর অসুখে বেড়ে উঠেছেন। টাইকো ব্রাহের সঙ্গে একসাথে কাজ করেছেন। ধর্মীয় ভাষ্যের বিরোধিতা করে বিজ্ঞানের সত্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন বলে ব্রাহেকে তো জীবনই দিতে হলো, এক্ষেত্রে কেপলারও কম লাঞ্ছিত হননি।